জয়পুরহাটে একটি মাদ্রাসার পাঁচ ছাত্রী নিখোঁজ
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার চাকলমুয়া সহীহ সুন্নাহ বালিকা মাদ্রাসার আবাসিক পাঁচ ছাত্রীর খোঁজ পাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কামরুন্নাহার শিমু বাদী হয়ে কালাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। খবর পেয়ে নিখোঁজ পাঁচ শিক্ষার্থীর পরিবার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসায় ৫৫ জন ছাত্রী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে ৫০ জন আবাসিক। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে আবাসিকের ছাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়ে। প্রতিদিনের মতো আজ ভোরে ছাত্রীদের ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য আবাসিকের তত্ত্বাবধায়ক মোছা. মঞ্জুয়ারা দরজা খুলে দেন। এরপর মাদ্রাসার পরিচালক ফিরোজ হোসেনের মেয়েসহ পাঁচ ছাত্রী বাইরে গিয়ে আর মাদ্রাসায় ফেরেনি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অন্য চার শিক্ষার্থীর বাসায় খোঁজ নেয়। তারা কেউই বাসায় যায়নি। নিখোঁজ পাঁচ শিক্ষার্থীর সবার বয়স ১০ থেকে ১২ বছর। তাদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীর ট্রাংক খুলে ভেতরে একটি করে চিরকুট পাওয়া গেছে। আজ বিকেল পর্যন্ত নিখোঁজ এই পাঁচ ছাত্রীর কারও খোঁজ মেলেনি।
নিখোঁজ এক ছাত্রীর চাচাতো ভাই শামীম হোসেন বলেন, ‘আমার চাচাতো বোন মাদ্রাসায় পড়ত। সে হঠাৎ করেই মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
নিখোঁজ এক ছাত্রীর ভাই হৃদয় হাসান বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় কোনো নিরাপত্তা নেই, সেটি আমরা জানতাম না। আজকে সকালে মাদ্রাসা থেকে আমাকে ফোন করে আমার বোনকে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। আমার বোনসহ পাঁচজন আজকেই চলে গেছে, নাকি আগে চলে গেছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এ ছাড়া তিনজনের ট্রাংকের ভেতর চিরকুট পাওয়া গেছে বলা হলেও সেটিও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ লিখে রেখেছে বলে সন্দেহ করছি।’
মাদ্রাসার পরিচালক ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে মোছা. কামরুন্নাহার শিমু মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। আজ ভোরে মাদ্রাসার আবাসিকের পাঁচ শিক্ষার্থীর খোঁজ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে আমার মেয়েও রয়েছে। মাদ্রাসায় গিয়ে নিখোঁজ পাঁচ ছাত্রীর মধ্যে তিনজনের ট্রাংকে চিরকুট পেয়েছি। তিনটি চিরকুটের লেখা প্রায় অভিন্ন। একজন লিখেছে, “প্রিয় মা-বাবা তোমাদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা তোমাদের কষ্ট দিতে চাই না। এ কারণে চলে যাচ্ছি। আমরা আবার ফিরে আসব।” মাদ্রাসার পাঁচ ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় কালাই থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নিয়েছে। আমরা এখনো পাঁচজনের কারও খোঁজ পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে আজ দুপুরে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াসিম আল বারির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।