সিলেট নগরের একটি সিএনজি পাম্প থেকে ১৬ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির হিসাবরক্ষককে মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় করা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার হয়েছে। এ পর্যন্ত ওই মামলায় তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে সিলেট নগরের তেমুখী এলাকায় মেসার্স সেফাত উল্লাহ ফিলিং স্টেশনের কার্যালয়ে জানালার গ্রিল কেটে ১৬ লাখ টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় সর্বশেষ গতকাল রাতে কেফায়েত হোসেন (২৬) নামের এক ব্যক্তিকে নগরের কানিশাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন প্রতিষ্ঠানটির হিসাবরক্ষক রিপন দাশ (২৭) ও নগরের খুলিয়াটুলা এলাকার ঝাড়ু মিয়া (২৮)।
কেফায়েত নগরের দক্ষিণ সুরমা বারখলা ও রিপন টুকের বাজার এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২৮ ডিসেম্বর রাতে ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় ব্যবসার ১৬ লাখ টাকা ও ১টি মুঠোফোন সিন্দুকে রেখে যান ব্যবসায়ী কামরান উদ্দিন। পরদিন সকালে সিন্ধুকের তালা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। পরে টাকা, মুঠোফোনের পাশাপাশি চেক বই ও প্রতিষ্ঠানের জরুরি কিছু কাগজপত্র খোয়া যাওয়ার বিষয়টি টের পান তিনি। এ ঘটনায় কামরান উদ্দিন বাদী হয়ে ২ জানুয়ারি রাতে সিলেটের জালালাবাদ থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, মামলার পরপরই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ২ জানুয়ারি রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে ঝাড়ু মিয়াকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩ জানুয়ারি ফিলিং স্টেশনটির হিসাবরক্ষক রিপনকে কর্মস্থল থেকে আটক করা হয়। পরে চুরির ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ৪ জানুয়ারি ফিলিং স্টেশনের হিসাবরক্ষক রিপন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে চুরির ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও দুজনের তথ্যও দেন। তাঁর দেওয়া জবানবন্দিতে পুলিশ গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে কেফায়েত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে কেফায়েতের কাছ থেকে চুরির প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের দাবি, ঝাড়ু সিলেটের চিহ্নিত চোর চক্রের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা আছে। সেই সঙ্গে কেফায়েত হোসেনের বিরুদ্ধেও চুরির ঘটনায় একাধিক মামলা আছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুপ কুমার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চুরির ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির হিসাবরক্ষক রিপন। চোর চক্রের সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফিলিং স্টেশনের কার্যালয়ে তিন দিনের বিক্রীত ১৬ লাখ টাকা রাখার তথ্য পায় চোর চক্রটি। পরে কার্যালয়ে জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে টাকা ও মুঠোফোন চুরি করেন চক্রটির সদস্যরা
অনুপ কুমার চৌধুরী আরও বলেন, টাকা চুরির পর নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছিলেন তাঁরা। ফিলিং স্টেশনের হিসাবরক্ষক ও ঝাড়ু মিয়ার কাছ থেকে চুরির অর্থ উদ্ধার করা যায়নি। তবে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেফায়েতের কাছ থেকে চুরির টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।