শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ ২৪ জন রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন
কনকনে শীতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে ২৪ জন দগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক সপ্তাহের মধ্যে রংপুর ও আশপাশের উপজেলায় দগ্ধ হওয়া ব্যক্তিদের হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ রোগীদের যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখা যায়। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দগ্ধ সামসুন্নাহারের (৫৫) শয্যার পাশে তাঁর মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ছিলেন। তিনি বলেন, গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে চুলায় আগুন পোহাতে গিয়ে কখন যে শাড়ির পেছনে আগুন ধরে যায়, তাঁর মা বুঝতে পারেননি। তাঁর মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে যান বাড়ির লোকজন। মোটা কাপড় দিয়ে আগুন নেভানো হলে, শরীর ঝলসে যায়। এরপর তাঁকে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা দগ্ধ সাহেরা খাতুনের (৬৫) শয্যার পাশে থাকা তাঁর ছেলের বউ রূপালী বেগম বলেন, ফজরের নামাজ পড়ার পর বাড়ির বাইরে আগুন পোহাতে গিয়ে শাড়ির পেছনে আগুন লাগে। আগুনে তাঁর শাশুড়ির শরীর ঝলসে যায়। তাঁকে ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রংপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়।
আগুন পোহাতে গিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারীর চরাঞ্চলে তসলিমার (৪০) শরীরের হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেলে আনা হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘি এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ১০ বছরের শিশু সালামের পাসহ শরীরে বিভিন্ন অংশ দগ্ধ হয়। তাকেও এই হাসপাতালে আনা হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক এম এ হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, শীতের সময় রংপুর অঞ্চলে আগুন পোহানোর কারণে অসাবধানতাবশত দগ্ধ হয়েছেন, এমন ২৪ জন নারী-পুরুষ ও শিশু চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও বলেন, গত বছর শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানা যায়, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানামা করছে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।