রংপুর নগরের গণেশপুর এলাকায় দুই বোনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার যুবক মাহফুজার রহমান দুই বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, প্রথমে সুমাইয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনা দেখে ফেলায় সুমাইয়ার ছোট বোন জান্নাতুল মাওয়াকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
গত শুক্রবার বিকেলে নগরের গণেশপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে দুই বোনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের একজন দাখিল পরীক্ষায় সদ্য পাস করা শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার (১৬) ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া (১৪)। তারা দুজন সম্পর্কে চাচাতো বোন।
রোববার বিকেলে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মাহাফুজার রহমান (২২)। জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ জানান, সুমাইয়া আকতারের (১৬) সঙ্গে নগরের উত্তর বাবু খাঁ এলাকার তরুণ মাহফুজার রহমানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অন্য একজনের সঙ্গে সুমাইয়া প্রেম করায় ক্ষুব্ধ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জবানবন্দিতে বলেছেন তিনি।
জবানবন্দিতে মাহফুজার বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সুমাইয়ার বাড়িতে যান মাহফুজার। এ সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সুমাইয়ার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়ার মা–বাবা কুড়িগ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সুমাইয়ার মা–বাবাও তখন বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে মাহফুজার ওই বাড়িতে যান। সেখানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে চলে যাওয়ার সময় পাশের ঘরে থাকা ছোট বোন দেখতে পায়। এ কারণে তাকেও গলা টিপে ধরেন। একপর্যায়ে তাকেও ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল।
ওসি আবদুর রশীদ জানান, এ ঘটনায় শনিবার সকালে একাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মমিনুল ইসলাম। শনিবারই নগরের বাবু খাঁ এলাকা থেকে মাহফুজার রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার বিকেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর মাহফুজারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, নগরের মুলাটোল আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল পাস সুমাইয়া আকতারের (১৬) লাশ ঘরের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় এবং তার চাচাতো বোন বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়ার (১৪) লাশ পাশের ঘরে মেঝের ওপর পড়েছিল। সুমাইয়াকে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার চাচাতো বোন মাওয়ার গলায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।