শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকালে সরকারি একটি প্রকল্পের ভাতা বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ওই প্রার্থী নৌকায় ভোট চান বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নাম মো. আবদুল লতিফ। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. তাকিজুল ইসলাম। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক।
ইউনিয়ন পরিষদ (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর ২৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না কিংবা এ-সংক্রান্ত সভায় যোগদান করতে পারবেন না।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকালে কাপাসিয়া মুক্তিযোদ্ধা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে যোগানিয়া ইউনিয়নের ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি)-যত্ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের মধ্যে অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ১ হাজার ২৬৪ জন উপকারভোগীর মধ্যে ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩০০ টাকা বিতরণ করা হয়। সকাল ১০টার দিকে মঞ্চে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও দলীয় প্রার্থী আবদুল লতিফ উপস্থিত হন। তিনি ওই ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমির হোসেনসহ কয়েকজন কর্মী নিয়ে হ্যান্ড মাইকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সব উপকারভোগীর কাছে ২৮ নভেম্বর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে আবদুল লতিফ ও তাঁর অনুসারীদের ফেসবুক আইডিতে এই ছবিসহ পোস্ট দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলায় যত্ন প্রকল্পের সুপারভাইজার মো. হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী হ্যান্ড মাইকে নৌকায় ভোট চাওয়ায় দ্রুত সেখানে গিয়ে মানা করা হয়েছে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন বলে তাঁকে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তাকিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি একজন প্রার্থী হয়ে সরকারের কর্মসূচিতে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে পারেন না। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ইউএনওকে সব ধরনের তথ্যপ্রমাণসহ অবগত করা হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই স্কুলের সভাপতি। আমি তো যেতেই পারি। কিন্তু নৌকায় ভোট চাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। আমি এখানে কেন ভোট চাইব?’
অবশ্য নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার ২৪ ধারায় বলা আছে, কোনো প্রার্থী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বা সদস্য পদে থাকলে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হবেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও হেলেনা পারভীন প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগেও এই প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে।