ইসির নির্দেশের পরও নির্বাচনী এলাকায় আছেন সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়েননি কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন, সেনানিবাস এলাকা) আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা এলাকার হোটেল নূর মহলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিকেল চারটা থেকে তিনি নগরের রামঘাট দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করেন।
সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর বাড়ি কুমিল্লা নগরের মুন্সেফ বাড়িতে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনকে নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করার জন্য গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২) মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওই তথ্য জানানো হয়।
গত সোমবার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন খুদে বার্তায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করি না। আমি কোনো নির্বাচনী সভায় অংশগ্রহণ করি না। নির্বাচন ছাড়াও আমার অনেক কাজ আছে। সেগুলো আমাকে করতে হয়। আমি সে কাজ করি।’
নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ২২ বিধি অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন না। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সম্প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে, কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন অত্যন্ত কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন, যা সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালার লঙ্ঘন। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে তদন্ত করালে লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, যা মোটেই কাম্য নয়।
তবে গত সোমবার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন খুদে বার্তায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করি না। আমি কোনো নির্বাচনী সভায় অংশগ্রহণ করি না। নির্বাচন ছাড়াও আমার অনেক কাজ আছে। সেগুলো আমাকে করতে হয়। আমি সে কাজ করি।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনী এলাকায় আছেন কি না বলতে পারব না। আমরা নির্বাচনের বিভিন্ন সভা নিয়ে ব্যস্ত আছি।’
গণসংযোগে মেয়র প্রার্থীরা
এদিকে দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত নগরের টিক্কারচর এলাকায় মতবিনিময় সভা করেন। এরপর বেলা সাড়ে তিনটায় থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তিনি নগরের বাউবন্দ, ধনাইতরি, কালীর বাজার এলাকায় পথসভা, চৌয়ারা পাইলট ক্লাবে মতবিনিময় সভা ও গোয়ালমথন এলাকায় উঠান বৈঠক করেন। এসব কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। মেয়র নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতা দূর করা হবে। আমি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করব। দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করব। নৌকা উন্নয়নের মার্কা।’
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের তালতলা এলাকায় গণসংযোগ করেন। বেলা একটায় থিরাপুকুরপাড় এলাকায় ও বিকেল চারটায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশারিপট্টি এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় মনিরুল হক বলেন, ‘কুমিল্লা নগরবাসী ভোটের ক্ষেত্রে তাঁদের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। তাঁরা টেবিলঘড়ি প্রতীকে ভোট দেবেন। যেখানে গিয়েছি, ভোটাররা টেবিলঘড়ি প্রতীকের পক্ষে কথা বলেছেন। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু ভোট চাই।’
১৫ জুনের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী লড়ছেন। অপর তিন প্রার্থী হলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, কামরুল আহসান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম।