পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আলোচিত বালিশ কাণ্ডের ঘটনায় ঠিকাদার শাহাদত হোসেনের জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসানের আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেন। এদিন বিকেলেই তিনি কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হন। তবে গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন রোববার।
ঠিকাদার শাহাদত হোসেন সাজিন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী। এটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের আবাসিক ভবনে ( গ্রিন সিটি) আসবাবপত্র সরবরাহ করেছে। এ কাজের জন্য পণ্য সরবরাহে অস্বাভাবিক দাম ধরে দুর্নীতি ও কেনাকাটায় অনিয়ম করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত ১৩ ডিসেম্বর ১৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে ৪টি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলার আসামি ঠিকাদার শাহাদত হোসেন। মামলার দায়ের পর ১৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ঠিকাদার শাহাদত হোসেন কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। বিভিন্ন সময় তিনি উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলেও তা নাকচ হয়ে যায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার শাহাদত হোসেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ভবনের জন্য কেনা বালিশের পেছনে ব্যয় দেখিয়েছেন ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে প্রতিটি বালিশের দাম ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। প্রতিটি বালিশ ভবনে তুলতে খরচ ধরেছেন ৭৬০ টাকা।
দুদকের পাবনা কার্যালয় ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বালিশ কাণ্ডের এ ঘটনায় দুদকের দায়ের চারটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় ঠিকাদার শাহাদত হোসেন অভিযুক্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে শাহাদৎ হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা এ দুটি মামলায় জামিনের আবেদন করেন। আদালত মামলার নথি যাচাই করে ওই আবেদন মঞ্জুর করেন। ওই দিন বিকেলে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঠিকাদার শাহাদত হোসেন মুক্ত হন।
আদালতে ঠিকাদার শাহাদতের আইনজীবী ছিলেন সনৎ কুমার সরকার ও সাহাবুদ্দিন সবুজ। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুর রহিম খান ও ওবাইদুল হক।
ঠিকাদার শাহাদত হোসেনের মুঠোফোন নম্বরের রোববার রাতে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
দুদক পাবনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাগুলো দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত হচ্ছে। দুটি মামলা থেকে ঠিকাদার শাহাদত হোসেনের জামিন হয়েছে, আমি এটা জেনেছি। তবে জামিনের কাগজপত্র এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। জামিনের পরই ওই ঠিকাদার কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে জেনেছি। কাগজপত্র পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’