হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশদাতারা দায় এড়াতে পারেন না: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার অভিযোগ প্রসঙ্গে শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, হেলিকপ্টার থেকে যাঁরা গুলি করেছেন, শুধু তাঁরাই দায়ী নন, যাঁরা নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা দায় এড়াতে পারেন না।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এক শুনানিতে এ মন্তব্য করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের সময় বাড়িতে, বাড়ির আঙিনায় ও পরিবারের সঙ্গে থাকা অবস্থায় গুলিতে নিহত ১০ শিশুর প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আদালত এ মন্তব্য করেন।

বাড়িতে, বাড়ির আঙিনায় ও পরিবারের সঙ্গে থাকা অবস্থায় গুলিতে শিশুদের মৃত্যুর কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন ও কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ৩১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। শুনানি নিয়ে আদালত আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।

এর আগে শুনানিতে ‘হেলিকপ্টার দেখতে এসে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, কোনো পাবলিক মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে স্বাধীনতার পর কেউ দেখেনি। এই হেলিকপ্টার থেকে ঘরে গুলি ছুড়েছে। আইনজীবীকে আদালত বলেন, ‘তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার কারণে মারা গেছে?’ তখন আইনজীবী বলেন, পত্রপত্রিকার খবরে এসেছে।

একপর্যায়ে আদালত বলেছেন, যারা সিস্টেম নষ্ট করে এসেছে, তাদেরও জবাবদিহিতা আছে। শুধু হেলিকপ্টারের ওপর থেকে গুলি কে করেছে, তা নয়। যাঁরা গুলি করেছেন, শুধু তাঁরাই দায়ী নন, যাঁরা অর্ডার (আদেশ) দিয়েছেন, তাঁরা দায় এড়াতে পারেন না।

৩১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার রিটটি করেন। ‘জানালায় দাঁড়াতেই গুলি এসে কেড়ে নিল শিশুটিকে’, ‘বাসার ছাদে বাবার কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট মেয়েটি’ ও ‘বারান্দায় দাঁড়ানো আহাদের ডান চোখে লাগে গুলি’ শিরোনামে প্রথম আলোয় প্রকাশিত এবং ‘ফুল হয়ে ফোটার আগে ঝরল ওরা’ শিরোনামে অপর একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করা হয়।