জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ ও টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করেছেন জলবায়ু অধিকারকর্মীরা।
জলবায়ুর সুরক্ষায় বৈশ্বিক কর্মসূচি ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’-এর অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সংসদ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। একশনএইড বাংলাদেশের যুব প্ল্যাটফর্ম এক্টিভিস্টার সহযোগিতায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
জলবায়ু অধিকারকর্মী রোকন আহমেদ জলবায়ু সুবিচার আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট শুধু পরিবেশের জন্য নয়; এটি সুবিচার, সমতা এবং একটি টেকসই পৃথিবীর জন্য আমাদের সম্মিলিত লড়াই। আমরা চিৎকার করে বলতে চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ বেচে দেবেন না।’
আরেক অধিকারকর্মী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা যদি এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে না দাঁড়াই, তাহলে একদিন এর ভয়াবহ পরিণতি মানবজাতির অস্তিত্ব পর্যন্ত মুছে দিতে পারে। তাই এখনই সময়, না হলে আর কখনোই নয়।’
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে। তারা নব্য ঔপনিবেশিক শোষণ, যুদ্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এই পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। পুঁজিবাদী মানসিকতা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, উন্নত দেশগুলোর কাছে মুনাফাই মুখ্য। এ প্রবণতা পৃথিবীতে বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে ধ্বংস করছে। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে দক্ষিণের দেশগুলোর তরুণ, কৃষক, নারী এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলোতে।
জলবায়ু সংকট নিরসন, এ বিষয়ে ন্যায়বিচার দাবি ও জনগণকে সচেতন করতে একশন এইড বাংলাদেশ ও এক্টিভিস্টা বাংলাদেশসহ ১৮ জেলার ৩৩টি যুব সংগঠনের তিন হাজারের বেশি জলবায়ুকর্মী এই স্ট্রাইকে অংশ নেন। একই সময় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট, কুষ্টিয়া, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, পটুয়াখালী, টেকনাফ, বান্দরবান, বরগুনা, নারায়ণগঞ্জসহ লোকাল রাইটস প্রোগ্রাম (এলআরপি) এবং বেশ কিছু লোকাল ইয়ুথ হাবের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকেরাও গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।
শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে তরুণ জলবায়ুকর্মীরা স্লোগান, প্ল্যাকার্ড, চিত্রকর্ম, গান, নাটক এবং পোস্টার প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানান। এ সময় এখনই জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করার আহ্বানসংবলিত ‘ডোন্ট সেল আওয়ার ফিউচার’ ‘ফিক্স দ্য ফাইন্যান্স’, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করো’, ‘ক্ষতিকারক কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ বন্ধ করো’, ‘ক্লাইমেট জাস্টিস নাউ’ এবং ‘জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ করুন’ ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন জলবায়ু আন্দোলনকারীরা।