সিনিয়র এএসপি আনিসুলের দাফন, বিচার দাবি পরিবারের
ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিহত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গাজীপুর মহানগরীর রাজবাড়ি মাঠে জানাজা শেষে শহরের সরকারি গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করেছেন নিহত ব্যক্তির বড় ভাই রেজাউল করিম।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় শহরের রাজবাড়ি ময়দানে অনুষ্ঠিত জানাজায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আজাদ মিয়া ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন। পরে শহরের সরকারি গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
নিহত আনিসুল করিমের বাড়ি গাজীপুর মহানগরীর জোড়পুকুরপাড় বরুদা এলাকায় সকালে গেলে তাঁর বড় ভাই রেজাউল করিম বলেন, তাঁর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁদের পরিবার প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই খুব চাপা স্বভাবের ছিল। মানসিকভাবে অনেক চাপ নিলেও সে কখনো কাউকে কিছু বলত না।’ তিনি জানান, তাঁরা দুই ভাই ও দুই বোন। কয়েক দিন ধরে তাঁর কিছুটা মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
রেজাউল করিম জানান, ২০১১ সালে আনিসুল করিম বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম শারমিন সুলতানা। এই দম্পতির সাফরান নামে চার বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। আনিসুল ২০০০ সালে গাজীপুর শহরের রানি বিলাসমণি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। কাজী আজিমউদ্দিন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশে যোগ দেন। তিনি পুলিশ ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তিনি সর্বশেষ বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
আনিসুলের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফাইজুদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে ঢাকার আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
আনিসুলের বন্ধু কাওসার আহমেদ বলেন, ছোটবেলা থেকে আনিসুল অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। ছিলেন সদালাপী ও বন্ধুবৎসল। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আগামীকাল বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করা হবে।
মানসিক সমস্যায় ভুগে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আনিসুল করিম। গতকাল সোমবার সকালে ভর্তির পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরপর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তাকে ভর্তির পরই একটি কক্ষে নিয়ে হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারধর করছেন।