লালমনিরহাটে পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
ভিত্তিহীন তিনটি মামলা করায় লালমনিরহাট সদর থানার পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি লালমনিরহাটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মেহেদী হাসান মণ্ডল পৃথক তিনটি মামলায় এ-সংক্রান্ত আদেশ দেন।
ওই পাঁচ কর্মকর্তা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, নুর আলম সরকার, সেলিম রেজা, জহুরুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে সুপারিশ করেছেন আদালত। এ বিষয়ে আদালতের সুপারিশ করা আদেশের কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, পুলিশের আইজিপি, লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার ও অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৩ জুন এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে লালমনিরহাট শহরের সাপটানা মাঝাপাড়া গ্রামের ধনঞ্জয় কুমার বর্মণের (৩৮) বিরুদ্ধে ২০টি লোপেন্টা (টাপেন্টাডল) ট্যাবলেট রাখার অভিযোগে থানায় মামলা করেন। সদর থানার এসআই নুর আলম সরকার ৮ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৩ অক্টোবর এ মামলার রায়ে বিচারক বলেন, বৈধ ওষুধ রাখা সত্ত্বেও ধনঞ্জয় কুমার বর্মণকে ভিত্তিহীন মামলায় আসামি করা হয়েছে এবং রাসায়নিক পরীক্ষকের প্রতিবেদন আমলে না নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগপত্র দাখিল করে দায়িত্বে অবহেলা করা হয়েছে। ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সুপারিশ করেন বিচারক।
এর আগে ১৮ মে লালমনিরহাট সদর থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে লালমনিরহাট শহরের গার্ডপাড়ার আশরাফুল আলমের (৩৪) বিরুদ্ধে ৩০টি টাপেন্টাডল ট্যাবলেট রাখার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় একটি মামলা করেন। ৩০ জুলাই এসআই জিল্লুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২ অক্টোবর এ মামলায় রায়ে বিচারক বলেন, বৈধ ওষুধ রাখা সত্ত্বেও শামসুল হককে ভিত্তিহীন মামলায় আসামি করা হয়েছে। এজাহারকারী এসআই সেলিম রেজা এবং রাসায়নিক পরীক্ষকের প্রতিবেদন আমলে না নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগপত্র দাখিল করে দায়িত্বে অবহেলার কারণে এসআই জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সুপারিশ করেন বিচারক।
এ ছাড়া গত ১২ মে এসআই সেলিম রেজা বাদী হয়ে লালমনিরহাট শহরের ওয়্যারলেস কলোনির শামসুল হকের (৩৬) বিরুদ্ধে ৩০টি টাপেন্টা ট্যাবলেট রাখার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা করেন। এসআই জহুরুল ইসলাম ৯ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলার রায়ে বিচারক বলেন, বৈধ ওষুধ দখলে রাখা সত্ত্বেও আশরাফুলকে ভিত্তিহীন মামলায় আসামি করা হয়েছে। এজাহারকারী এসআই জহুরুল ইসলাম এবং রাসায়নিক পরীক্ষকের প্রতিবেদন আমলে না নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগপত্র দাখিল করায় এসআই জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেন আদালত।
গতকাল বিকেলে এসআই সেলিম রেজা বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। তবে কাগজ পাইনি। তাই কোনো কিছু বলতে পারছি না।’ রাতে এসআই জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি এখন ঢাকায় প্রশিক্ষণে। তাই বেশি কিছু বলতে পারছি না।’