ফোরম্যানের কাছে অস্ত্র এল কীভাবে?
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সাংসদ দিদারুল আলমের মালিকানাধীন পণ্য পরিবহনকারী গাড়ির গ্যারেজে গুলিবিদ্ধ হয়ে চালক শাহজাহান সাজু (৪৮) খুনের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে নিহত শাহজাহানের স্ত্রী শাহিদা আকতার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে গ্যারেজের ফোরম্যান মো. মাসুমকে (২৮) আসামি করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ওই ফোরম্যানের কাছে অস্ত্র এল কীভাবে?
চালক শাহজাহানকে গুলি করা হয়েছে একটি পিস্তল থেকে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মসিউদ্দৌলা রেজা বলেন, ফোরম্যান মাসুম অসাবধানতায় কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে গুলিটি করে। ঘটনার উদ্দেশ্য কী জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে পিস্তলটি অবৈধ। সেটি উদ্ধারে ও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাবেন তাঁরা।
ওই গ্যারেজে কোনো ধরনের অস্ত্র রাখা কিংবা ব্যবহারের অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম শেখ প্রথম আলোকে বলেন, গ্যারেজের প্রহরী ও দারোয়ান নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করতে হলে তার লাইসেন্স থাকতে হবে। লাইসেন্স থাকলে পুলিশ তা জানত। পাহারার জন্যও কোনো অস্ত্র দেওয়া হয়নি। কোনো ব্যক্তি অবৈধ পন্থায় অস্ত্রটি এনে রেখেছেন।
সাংসদ দিদারুল আলম বলেন, হতে পারে অস্ত্রটির ব্যবহার তাঁর জন্য আগাম সতর্কবার্তা। অস্ত্রটি তাঁর দিকেও তাক হতে পারত। তাঁরা কাউকে অস্ত্র রাখার অনুমতি দেননি বলে জানান তিনি।
নিহত শাহজাহান নিজেদের কোম্পানির দীর্ঘদিনের চালক বলে স্বীকার করলেও অভিযুক্ত মাসুমকে নিজেদের ফোরম্যান নয় বলে দাবি করেছেন সাংসদ দিদারুল আলম। তিনি বলেন, প্রয়োজনের সময় অন্য কোম্পানির কিছু গাড়ি তাঁরা আনেন। মাসুম ওই কোম্পানির ফোরম্যান। কিন্তু কোম্পানিটির নাম প্রকাশ করেননি তিনি। কীভাবে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মাসুম গ্যারেজে ঢুকেছে তা বোধগম্য নয় বলে দাবি তাঁর।
এ ঘটনায় খুনিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের ডিপোতে জরুরি বৈঠকে বসেন শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতারা।
গত বুধবার দুপুরে উপজেলার ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে শুকতারা রেস্তোরাঁর বিপরীতে সাংসদ দিদারের মালিকানাধীন পণ্য পরিবহন কাজে ব্যবহৃত গাড়ি রাখার গ্যারেজে শাহজাহানকে গুলি করা হয়। পরে অন্য শ্রমিকেরা তাঁকে উদ্ধার করে নগরের বেসরকারি আল আমিন হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক শাহজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী শাহিদা আকতার উল্লেখ করেন, মাসুমের সঙ্গে শাহজাহানের পূর্বশত্রুতা ছিল। মাসুমই শাহজাহানকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে মৃত্যুর আগে তাঁকে জানিয়ে গেছেন।