কসবায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের সময় টিলাধসে এক স্কুলছাত্র নিহত, আহত দুই, অবৈধ ড্রেজার মেশিন জব্দ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের সময় টিলাধসে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ সময় আরও দুই ড্রেজার শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকালে উপজেলার বিষ্ণউড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত ওই ছাত্রের নাম কেফায়তুল ইসলাম (১৩)। সে কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের কালসার গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে। কেফায়তুল বিষ্ণাউড়ি গ্রামের তাঁর খালার বাড়িতে থেকে জয়নগর লিয়াকত আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার পর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থল থেকে একটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছেন এবং অপর একটি মেশিন আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিষ্ণাউড়ি গ্রামের আমজাদ হোসেন ভূইয়া ওরফে জাকির হোসেন টিলার নিচ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে পাহাড়ি বালু উত্তোলন করছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিল। তারপরও জাকির নিয়মিত বালু উত্তোলন করছেন। শনিবার সকালে সেই ধারাবাহিকতায় টিলার নিচ থেকে বালু উত্তোলন করছিলেন। এ সময় স্কুলছাত্র কেফায়তুল ওই টিলার ওপর যায়। নিচে মাটি না থাকায় এ সময় ওই টিলাটি ধসে পড়ে। এতে কেফায়তুল গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ড্রেজার শ্রমিক মনিয়ন্দ গ্রামের ফারুক মিয়া (৩০) ও বিষ্ণাউড়ি গ্রামের হারুন মিয়া (৩৫) আহত হয়েছেন। তাঁদের তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কেফায়তুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত বাকি দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কেফায়তুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করতে গিয়ে টিলাধসে এক স্কুলছাত্রের মৃত হয়েছে। একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়েছে। অপর একটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হবে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে টিলার নিচ থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে ফেব্রুয়ারি মাসে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মালেক বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করতে গিয়ে এক স্কুলছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরও বলেন, জাকির হোসেনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়া অভিযুক্ত ড্রেজারমালিক জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে কল করলেও তিনি তা ধরেননি।