সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে খুনের পর গত ১৯ মে মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী কলকাতা থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীনকে ফোন করে তাঁদের একজন বলেন, ‘আমরা কোথায় থাকব?’ এরপর তাঁরা শাহীনের বসুন্ধরার বাসায় যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী শিমুল ভূঁইয়াকে ফোন করেন। কিন্তু কথা বলতে বলতে মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায়। তখন শাহীনের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী তাঁদের ৩০ হাজার টাকা দেন। সেই টাকা নিয়ে তাঁরা খাগড়াছড়ির গহিন অঞ্চলে চলে যান।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
আনোয়ারুল আজীম খুনের ঘটনায় বাংলাদেশ ও ভারতে এখন পর্যন্ত নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ডিবি বলছে, এর মধ্যে সাতজনই সরাসরি হত্যায় অংশগ্রহণ করেন। এ পর্যায়ে এসে আনোয়ারুল হত্যার কারণ জানা গেল কি না, এমন প্রশ্ন ছিল ডিবির হারুন অর রশীদের কাছে।
জবাবে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন বলেন, ‘যেকোনো হত্যার পেছনে একটা মোটিভ থাকে। আনোয়ারুল জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁকে টাকা-পয়সা লেনদেনের কথা বলে ভারতে নিয়ে যান শাহীন। তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছিল, কারা লাভবান, কারা আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে লাভবান, সেটা আশা করি বের হবে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সুনির্দিষ্ট মোটিভ (হত্যার কারণ) বলতে পারছি না।’
হারুন বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সম্ভাব্য সব কারণ আমলে নিয়ে তদন্ত করছি। শেষ গ্রেপ্তার হওয়া দুজনকেও রিমান্ডে হত্যার সম্ভাব্য সব কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
ডিবির ভাষ্য, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম খুনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে এখন পর্যন্ত যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফকির ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজী। এই দুজন খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাঁরা সংসদ সদস্যকে খুনে সরাসরি অংশ নেন। খুনের ১১ দিন আগে তাঁরা বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতায় গিয়ে সেখানকার নিউমার্কেট এলাকার ‘হোটেল প্লাজা’য় ওঠেন। খুনের ছয় দিন পর তাঁরা ঢাকায় ফিরে আত্মগোপনে চলে যান।