স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ড, পালানোর ১৬ বছর পর পড়লেন ধরা
বগুড়ার উজ্জ্বল প্রামাণিক ২০০৬ সালে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়ে একই এলাকার বাসিন্দা আলো বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর বিদেশে যাওয়ার খরচ জোগাতে আরও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন উজ্জ্বল। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় স্বজনদের সহায়তায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে গাজীপুরে এসে পরিচয় গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে ও কাঠমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন।
ওই হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গত ২৪ জুলাই উজ্জ্বলকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার র্যাব অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩–এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বগুড়া সদর থানার কৈচড় দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল প্রামাণিকের সঙ্গে ২০০৬ সালের জুনে একই এলাকার আলো বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের দিন উজ্জ্বল ও তাঁর পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। বিয়ের পর বিদেশে যাওয়ার জন্য স্ত্রীর কাছে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উজ্জ্বল। এ অবস্থায় পারিবারিক সালিসে যৌতুক বাবদ আরও ৫০ হাজার টাকা উজ্জ্বলকে দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে উজ্জ্বল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আলো বেগমকে তালাক দেওয়ার ভয় দেখান। একপর্যায়ে তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান তাঁরা।
র্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, উজ্জ্বলের ভগ্নিপতি নাজমুল হোসেন ওরফে লাবু ২০০৬ সালের ১ আগস্ট আলোর পরিবারকে ফোন করে জানান, আলো গুরুতর অসুস্থ। এরপর উজ্জ্বলের বাড়িতে গিয়ে মেঝেতে আলোর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর স্বজনেরা। পরে এ ঘটনায় উজ্জ্বল প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে বগুড়া সদর থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়।
স্ত্রীকে হত্যার পর উজ্জ্বল তাঁর মা আলেয়া বেওয়াকে নিয়ে পালিয়ে গাজীপুরে চৌরাস্তা এলাকায় চলে আসেন। পরিচয় গোপন করে ছয় মাস পর নাছিমা খাতুন নামের একজনকে বিয়ে করে এ জেলাতেই বসবাস শুরু করেন। তাঁদের দুটি সন্তান আছে। পালিয়ে আসার পর থেকে বগুড়ায় নিজবাড়ি ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখেন তিনি। কিছুদিন আগে তিনি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন, তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এরপর আশুলিয়ার একটি ভাড়া বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।