কামরাঙ্গীরচরে মেলার মাঠ বরাদ্দ নিয়ে বোমাবাজি-ভাঙচুর, যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ১৩
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মেলা আয়োজনের মাঠ বরাদ্দ নিয়ে বোমাবাজি ও ভাঙচুরের ঘটনায় এক বিএনপি নেতার ১৩ অনুসারীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যৌথ বাহিনী গত মঙ্গল ও গতকাল বুধবার অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পিস্তলের ৩০টি গুলি, ৪টি ককটেল, ১টি ছোরা ও ১টি চাকু উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. ইউনুস সরদার (৪০), মো. আল আমিন (৩২), আক্তার হোসেন (৩৪), কবির শেখ (৪৩), বাবুল ওরফে বাবু (৩০), বাবু (২৫), মো. আলম (২৫), মো. সজল (৩০), মো. মাসুদ (২৫), মোকসেদুল শামীম শান্ত ওরফে কাজিম শান্ত (২৮), মো. জহিরুল্লাহ রিপন (৫৬), বিল্লাল হাসান ওরফে কাল্লু (৩০) ও মাসুদ মিয়া (২০)। তাঁরা সবাই কামরাঙ্গীরচরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেনের সহযোগী। মনির হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বলে পুলিশ ও রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
আজ ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ এলাকার ঠোঁটার মাঠ নামক স্থানে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মেলা আয়োজন নিয়ে মনির হোসেন ও তাঁর প্রতিপক্ষ পারেভজ ওরফে ছোট বাবুর মতবিরোধ দেখা দেয়। মঙ্গলবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দরপত্র আহ্বান করলে পারভেজ মাঠটি বরাদ্দ পান। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে পারভেজ ও তাঁর ৩০–৪০ জন সহযোগী মাঠের ঘাট এলাকায় একত্র হয়ে মাঠ পরিচালনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। রাত ১০টার দিকে প্রতিপক্ষ মনির হোসেনের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন–চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় তাঁরা পারভেজের পক্ষের তিন–চারজনকে মারধর করে গুরুতর আহত করেন। পরে মনির হোসেনের অনুসারীরা মুসলিমবাগ এলাকায় ফারুক মেম্বারের বাড়ির সামনে আরও ৮–১০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান এবং তাঁর বসতবাড়ি ভাঙচুর করেন। ওই ঘটনায় ফারুক মেম্বার বাদী হয়ে মনির চেয়ারম্যানসহ তাঁর ২০ সহযোগীর বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি মামলা করেন।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর দল অভিযান চালিয়ে মনির হোসেনের বাড়ির দক্ষিণ পাশের বাসিন্দা নূর ইসলামের বাড়ির ছাদ থেকে চারটি ককটেল উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া ককটেকগুলো পরে জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিএমপির বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ দল নিষ্ক্রিয় করে। পরদিন বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে মনির চেয়ারম্যানের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অফিসকক্ষের আলমারির ড্রয়ারের ভেতর থেকে পিস্তলের ৩০ রাউন্ড গুলি, ১টি ছোরা ও ১টি ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় মনির হোসেনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় অস্ত্র আইনেও একটি মামলা করা হয়।
আজ বিকেলে যোগাযোগ করা হলে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মনির চেয়ারম্যান এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি। ঘটনার পর তিনি পালিয়ে গেছেন। গ্রেপ্তার ১৩ জনকে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।