সোনারগাঁ জনপথ দখল করে বাণিজ্য

উত্তরার সোনারগাঁ জনপথ সড়কের দুই পাশের ফুটপাত ও অর্ধেক রাস্তা অবৈধ দখলে চলে গেছে। সেখানে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। ফুটপাতের সীমানা ছাড়িয়ে মালপত্র রাখা হচ্ছে রাস্তায়। এতে মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
সোনারগাঁ জনপথ সড়কে দেখা গেল, উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের মোড়ের জমজম টাওয়ার থেকে ১২ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম অ্যাভিনিউ (ময়লার মোড়) পর্যন্ত, রাস্তার দুই পাশে দখলের পরিমাণ ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায় এসে নেমেছে। ফুটপাত ও রাস্তার ওপর রাখা হচ্ছে ইট, বালু, সুরকি, ময়লা, আবর্জনা, বাঁশ, গাড়ির যন্ত্রাংশ, তুলা, লেপ, তোশক প্রভৃতি। ভাঙা হচ্ছে ইট, নির্মাণ করা হয়েছে টং-দোকান, গাড়ির গ্যারেজ। রাস্তায় রাখা হচ্ছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গণপরিবহন। লোকজনকে ফুটপাত ছেড়ে ঝুঁকি নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে মূল সড়কে নেমে। রাস্তা হয়ে গেছে সরু।
ওই পথে চলাচলকারী একাধিক পথচারী বলেন, অনেক দিন ধরেই এভাবে ফুটপাত ও মূল সড়ক দখল করে ব্যবসা চলছে। ফলে হেঁটে চলাচলে পথচারীদের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে রাখার কারণে প্রায় সময় সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
সড়কটির ওই অংশের শুরুতেই উত্তর পাশে রয়েছে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর কাঁচাবাজার। বাজারের সামনের অংশের ফুটপাত পুরোটাই দখল করে রাখা হয়েছে ফলমূল, শাকসবজি, লেপ, তোশক ও বালিশের দোকান দিয়ে। রাস্তা-সংলগ্ন প্রতিটি দোকানের সামনের অংশই দখল করা।
অন্যদিকে, ময়লার মোড়ে (উত্তরার কয়েকটি সেক্টরের আগের ময়লা রাখার জায়গা) আবর্জনায় থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্র (ভাঙারির ব্যবসা) বেচাকেনার দোকান গড়ে উঠেছে। কয়েক মাস আগে ময়লা রাখার স্থান, এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন), উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের কবরস্থানের পাশে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হলেও আবর্জনা সংগ্রহ করা বিক্রয়যোগ্য উচ্ছিষ্ট সব জিনিস নিয়ে জড়ো করা হচ্ছে সেখানে। ফলে ময়লার মোড়ে ময়লা থেকে যাচ্ছে। ভাঙারি জিনিসপত্র সংগ্রহের পর বস্তায় ভরে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে রাস্তায়। রাস্তার পাশের খালি প্লটে হচ্ছে বাঁশের ব্যবসা। বাঁশগুলো কেটে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা আছে রাস্তায়।
জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন বলেন, ‘জায়গাটি রাজউক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের। তারা রাস্তা ও ফুটপাত পরিষ্কার করতে পুলিশ চেয়ে আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা দেব। আমি নিজেও রাস্তার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার জন্য রাজউকের পরিচালক এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ডেপুটি পরিচালক বরাবর আবেদন করেছি।’ রাস্তাটি দখলমুক্ত করার বিষয়ে রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-২-এর উপপরিচালক বাবুল মিয়া নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আছেন। তিনি এ বিষয়ে ভালো জানবেন। তবে তিনি বলেন, ওই স্থানে রাস্তার দুই পাশের অধিকাংশ বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দের কাজ শেষ। কিছু প্লট নিয়ে মামলা চলছে। প্লট বরাদ্দের পর সেটি যথাযথ ব্যবহার না করা হলে তার বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সড়কটির ফুটপাত ও রাস্তার অবৈধ দখল উচ্ছেদের প্রসঙ্গে ডিএনসিসি, উত্তরা ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবছার খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।