প্রথম মেট্রোরেল চালাবেন এক নারী

মেট্রোরেলের চালকের আসনে বসবেন মরিয়ম আফিজা। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোরেল (লাইন–৬) পরিদর্শন করে মরিয়ম আফিজাকে অভিনন্দন জানান জাইকার প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণপরিবহনে নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বেলা ১১টায় উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল স্টেশনের পাশের মাঠে এক অনুষ্ঠানে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি উত্তরা থেকে মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও আসবেন, এই মেট্রোরেলের চালকের আসনে থাকবেন একজন নারী। তিনি মরিয়ম আফিজা। ‘ট্রেন অপারেটর’ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মেট্রোরেল চালানোর জন্য কয়েক মাস ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন

ট্রেন অপারেটরদের পাশাপাশি ‘স্টেশন কন্ট্রোলার’ও মেট্রোরেল চালাবেন। তবে তাঁদের মূল দায়িত্ব থাকবে স্টেশন থেকে ট্রেন পরিচালনায় যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করা। এই পদেও একজন নারী রয়েছেন। তাঁর নাম আসমা আক্তার। তাঁকেও কয়েক মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
আসমা আক্তার মেট্রোরেলের স্টেশন কন্ট্রোলার পদে কাজ করার জন্য তৈরি হয়েছেন। তিনিও মেট্রোরেল চালাতে পারবেন
ছবি: সংগৃহীত

মরিয়ম ও আসমা প্রথমে চট্টগ্রামের হালিশহরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনিং একাডেমিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ নেন। ঢাকায় ফিরে আরও চার মাস প্রশিক্ষণ নেন তাঁরা। উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের ডিপোতে কারিগরি ও প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঁদের। সেখানে মেট্রোরেলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাপানের মিতসুবিশি-কাওয়াসাকি কোম্পানির বিশেষজ্ঞরা ট্রেন পরিচালনার কারিগরি ও প্রায়োগিক নানা প্রশিক্ষণ দেন। এরপর তাঁরা দিল্লি মেট্রোরেল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন।

মরিয়ম আফিজা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। লক্ষ্মীপুরের মেয়ে মরিয়ম নিয়োগ পেয়েছেন গত বছরের ২ নভেম্বর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেল বাংলাদেশে প্রথম। এই চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন আগ্রহ থেকেই। তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল অনেকের মতো আমার কাছেও একটা স্বপ্ন। আমি নিজে ট্রেন চালাব—এটা ভেবে এখনই বেশ আনন্দ লাগছে।’

আরও পড়ুন

আসমা আক্তার রাজধানীর তিতুমীর কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। স্টেশন কন্ট্রোলার পদে নিয়োগ পান ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে একটা চাকরি করব—শুধু এটা ভেবেই এখানে আসিনি। মেট্রোরেল–ব্যবস্থার প্রতি একটা প্যাশনও কাজ করেছে। এ জন্য প্রশিক্ষণে মেট্রোরেলের খুঁটিনাটি সবই রপ্ত করার চেষ্টা করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমার পদ স্টেশন কন্ট্রোলার হলেও ট্রেন চালাতে হতে পারে। এটা আসলেই একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার।’

আরও পড়ুন

মেট্রোরেল প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের আগস্টে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে উত্তরা-আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন হচ্ছে আগামীকাল। এই পথে নয়টি স্টেশন আছে। আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে ট্রেন চালু হতে পারে আগামী বছরের ডিসেম্বরে। এই পথে স্টেশনের সংখ্যা ৭।

আরও পড়ুন