২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

করোনার অরূপান্তরিত অংশকে লক্ষ্য বানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা

করোনা টিকা
প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের শরীরের এমন একটি অংশ শনাক্ত করেছেন, যার কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে না। এই অপরিবর্তিত অংশই এখন বিজ্ঞানীদের মনোযোগের কেন্দ্রে। এ অংশকে লক্ষ্য বানিয়ে বিজ্ঞানীরা ওষুধ বা টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাতে সফল হলে করোনাভাইরাসের যেকোনো ধরন মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম হোসেন খন্দকার বিজ্ঞান ভবনে শুক্রবার আয়োজিত একটি সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওষুধবিজ্ঞানী ও যুক্তরাষ্ট্রের রিজেনারন ফার্মাসিউটিক্যালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ শামীম এসব কথা বলেন। ওষুধবিজ্ঞান, ওষুধবিদ্যা চর্চা ও সনাতন চিকিৎসাবিষয়ক দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগ ও ফার্মাসি অনুষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মেদ শামীম করোনার ওষুধ ‘রিজেন–কোভ’ উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়ার আগেই ‘রিজেন–কোভ’ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যবহার করেছিলেন। ওই ওষুধ উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া ও ইতিহাস তুলে ধরে মোহাম্মেদ শামীম বলেন, করোনাভাইরাসের নিয়মিত পরিবর্তন ও রূপান্তর (মিউটেশন) হচ্ছে। এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত টিকা এবং ওষুধ করোনাভাইরাসের সব ধরনের ক্ষেত্রে সমান কার্যকর হতে দেখা যাচ্ছে না।

বিশিষ্ট ওষুধবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়র ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক তাঁর ছাত্রের (মোহাম্মেদ শামীম) কাছে জানতে চান, করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করা সম্ভব হবে কি না। উত্তরে মোহাম্মেদ শামীম বলেন, নিয়মিত রূপান্তরের পরেও করোনাভাইরাসের শরীরে এমন একটি অংশ রিজেনারন ফার্মাসিউটিক্যালসের বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন, যার কোনো পরিবর্তনের ইতিহাস দেখা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা ওই অংশকে লক্ষ্য করে নতুন ওষুধ বা টিকা উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেছেন। আগামী জুন–জুলাই মাসে এ নিয়ে পরীক্ষা (ট্রায়াল) তাঁরা শুরু করবেন। সেই পরীক্ষা সফল হলে করোনাভাইরাসের যেকোনো ধরনকে পরাস্ত করা যাবে।

আরও পড়ুন

সম্মেলনের প্রথম প্লেনারি অধিবেশনের অন্য বক্তা ইনসেপ্টা ফার্মার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির বলেন, বাংলাদেশে ওষুধশিল্পের অগ্রগতি অতুলনীয়। বিশ্বের যে গুটিকয়েক দেশ ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ, বাংলাদেশ তার একটি। এই শিল্প অদূর অভিষ্যতে আরও ভালো করবে। এই শিল্পে বহু ওষুধ বিজ্ঞানীর দরকার হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে তাঁদের বিদেশ যাওয়ার দরকার হবে না, দেশেই তাঁরা সম্মানের সঙ্গে ভালো কাজ পাবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  মো. আখতারুজ্জামান বলেন, একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সম্মেলনের পরে যেন নতুন কোনো উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি হয়। অন্যের অনুকরণ না করে তিনি বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয় নিয়ে গবেষণার আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি এবং বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গবেষণার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক থাকে। যেমন অক্সফোর্ডের গবেষকদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বাংলাদেশে এমন নজির দেখা যায় না।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফার্মাসি অনুষদের ডিন সিতেশ চন্দ্র বাছার।  

আরও পড়ুন