সাশ্রয়ী দামে করোনা শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করল বিসিএসআইআর
দেশে সাশ্রয়ী দামে করোনা শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ এক বছরের গবেষণায় এই কিট উদ্ভাবন করা হয়েছে।
আজ রোবরাব এ উপলক্ষে বিসিএসআইআরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ বলেন, বিসিএসআইআর কোভিট কিট করোনা শনাক্তের জন্য একটি সহজ ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি।
এর ফলে এখন দেশের মানুষ স্বল্প মূল্যে করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন। ইতিমধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই কিট উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল গবেষণা পরিষদ এই কিটের এথিকেল ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিসিএসআইআরের নেতৃত্বে এই কিট তৈরিতে সহায়তা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এই কিটের ন্যূনতম শনাক্তকরণ ক্ষমতা ১০০ কপি ভাইরাস/মিলি, যেখানে আমদানি করা অন্য কিটগুলোর শনাক্তকরণ ক্ষমতা ১ হাজার কপি ভাইরাস/মিলি। অর্থাৎ বিসিএসআইআরের কোভিড কিট দ্বারা একেবারেই ন্যূনতমসংখ্যক ভাইরাসকে শনাক্ত করা যাবে। ফলে রোগের উপসর্গ প্রকাশের আগেই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপনা তুলে ধরেন বিসিএসআইআরের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোর্শেদ হাসান সরকার। তিনি জানান, বিসিএসআইআরে কোভিড কিটে ‘এম’ জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই জিনে অন্যান্য জিনের মতো মিউটেশন ঘটার প্রবণতা কম। এই কিটে ভুল নেগেটিভ ফলাফলের আশঙ্কা কম।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ জানান, বিসিএসআইআর অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে আরএনএ এক্সট্রাকশনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এ জন্য বিসিএসআইআরের কিটের উৎপাদন খরচ বাণিজ্যিক কিটগুলোর চেয়ে কম। তাই উদ্ভাবিত এই কিট দ্বারা প্রতিটি শনাক্তকরণ পরীক্ষায় খরচ হবে ২৫০ টাকা। এখন দেশীয় কোনো প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দিয়ে কিটটি উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘বিবিসিএসআইআর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মিলে যে আমরা বড় কাজ করতে পারি, তার একটি নমুনা পাওয়া গেল। এসব ল্যাবকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করতে হবে।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাঙালির মেধা ভিন্ন দেশে আগে কাজ করত, এখন থেকে নিজ দেশেও বাঙালিরা অনুপ্রেরণা পাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসএমএমইউর কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) আতিকুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রফিকুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।