কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে অবিলম্বে অক্ষত ও নিরাপদ অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভাববৈঠকি ও চিন্তা পাঠচক্রের সদস্যরা।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে আটক হওয়া রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রংপুর মহানগরের নেতা কনক রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন ভাববৈঠকি ও চিন্তা পাঠচক্রের সদস্যরা।
এই দুই দাবির পাশাপাশি আরও চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলো হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নেওয়া; কারফিউ প্রত্যাহার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অবিলম্বে চালু ও ইন্টারনেটের পূর্ণগতি নিশ্চিত করা; নিহতদের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং গণগ্রেপ্তার ও গায়েবি মামলার নামে হয়রানি বন্ধ করা।
গতকাল রোববার ভোররাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস–সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে আরিফ সোহেলকে ডিবি ও সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় বলে তাঁর স্বজনেরা জানান। আরিফ সোহেল ভাববৈঠকি ও চিন্তা পাঠচক্রের নিয়মিত সদস্য।
এর আগে রোববার গভীর রাতে ভাববৈঠকির নিয়মিত সদস্য কনক রহমানকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কোথা থেকে বা কোন থানায় তাঁকে নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
ভাববৈঠকি ও চিন্তা পাঠচক্রের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলেও ডিবি কিংবা সিআইডি—কেউই আরিফের কাস্টডি (হেফাজতে নেওয়া) স্বীকার করেনি। এ ব্যাপারে আমরা আরিফের বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। অবিলম্বে আরিফকে অক্ষত ও নিরাপদ অবস্থায় তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আরিফকে আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না করা হলে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা স্পষ্টতই “বলপ্রয়োগমূলক গুম” হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা আরিফ সোহেলকে অবিলম্বে দৃশ্যমান ও মুক্ত অবস্থায় দেখতে চাই।’
কনক রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে, বিশেষত ঢাকায় পুলিশ ও অপরাপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে পাইকারি গণগ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অনেক নাগরিককে বিনা কারণে হয়রানির উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা তাঁদের প্রত্যেকের মুক্তি দাবি করছি।’