হাজারীবাগে নতুন হচ্ছে কমিউনিটি সেন্টার
পুরান ঢাকার হাজারীবাগের খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টারটি নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ দিয়েছে ডিএসসিসি। কমিউনিটি সেন্টারটি ৯ তলাবিশিষ্ট হবে। সেখানে গ্রন্থাগার, ইনডোর গেমস, ব্যায়ামাগারসহ নানা সেবা পাওয়া যাবে।
এই উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই কমিউনিটি সেন্টার জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল। সেখানে কোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা সম্ভব ছিল না। বেশি খরচে ব্যক্তিমালিকানাধীন কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে হতো। আর যাঁদের সামর্থ্য কম ছিল, তাঁরা বাসাবাড়িতে অনুষ্ঠান করতেন। এই অবস্থায় নাগরিক সেবা বৃদ্ধির জন্য নতুন করে এই কমিউনিটি সেন্টারটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
হাজারীবাগ রোডে প্রায় ৩৪ কাঠা জায়গার ওপর খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, আগের পুরোনো একতলা সেমিপাকা ভবনে ছিল খলিল সরকার কমিউনিটি সেন্টার। সেখানে তেমন কোনো সুবিধা ছিল না। এখন এই ভবনটি ভেঙে নয়তলা ভবনের কাজ চলছে। ভবনটি নির্মাণ শেষ হলে এর ভূগর্ভস্থ তলায় গাড়ি পার্কিং, নিচতলায় ক্যাফেটেরিয়া, এটিএম বুথ, শিশুদের খেলাধুলার সামগ্রী, দোকান, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন থাকবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা মিলে থাকবে কমিউনিটি হল। চতুর্থ তলায় ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্যালয়, সংগীত ও ছবি আঁকার প্রশিক্ষণকেন্দ্র, পঞ্চম তলায় ইনডোর গেমস ও ব্যায়ামাগার (পুরুষ), ষষ্ঠ তলায় ইনডোর ক্রিকেট (ব্যাটিং প্র্যাকটিস জোন), সপ্তম তলায় ইনডোর গেমস ও ব্যায়ামাগার (নারী), অষ্টম তলায় গ্রন্থাগার ও নবম তলায় থাকবে রেস্তোরাঁ।
গত বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখা যায়, হাজারীবাগ মাঠের পশ্চিম পাশে খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টারের ভূগর্ভস্থ অংশের নির্মাণকাজ চলছে। আর মাঠের পাশে বসে এই ভবন বা কমিউনিটি সেন্টারের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কথা বলছেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে হাবিবুর রহমান বলেন, নাগরিক সেবায় হাজারীবাগের মানুষ অন্য অনেক এলাকা থেকে পিছিয়ে। এই কমিউনিটি সেন্টারটি নির্মাণ হলে এই এলাকার মানুষের চাহিদা খানিকটা পূরণ হবে। তাঁরা বলেন, বেসরকারি একটি কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিয়ে বা সামাজিক অনুষ্ঠান করতে চাইলে সাধারণত ভাড়া বাবদ ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। ডিএসসিসির কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া পড়ে এক-তৃতীয়াংশ। তাই এই কমিউনিটি সেন্টার হলে বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।
কমিউনিটি সেন্টারের ভেতর ব্যায়ামাগার ও ইনডোর গেমস বা ক্রিকেট–সুবিধা থাকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে হাজারীবাগ মাঠে খেলাধুলা করতে আসা শিশু-কিশোরেরা। তারা বলে, অনেক সময় বৃষ্টি হলে মাঠে খেলাধুলা করা যায় না। আবার শুষ্ক মৌসুমে মাঠে প্রচুর ধুলাবালি ওড়ে। কমিউনিটি সেন্টার ভবনের ভেতর খেলাধুলার সুযোগ থাকলে অনেক ভালো হবে।
২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টারের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম পর্যায়ে কমিউনিটি সেন্টারের ভূগর্ভস্থ থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। পরে ওপরের তলাগুলো ক্রমান্বয়ে নির্মাণ করা হবে।
ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারিকুল ইসলাম বলেন, ডিএসসিসি থেকে এই এলাকায় একটি আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হচ্ছে। এতে মহল্লার মানুষ অনেক খুশি।