বাসযোগ্যতা
নামে অভিজাত, সুবিধায় নয়
জনঘনত্ব বৃদ্ধি এবং নিয়মনীতি না মানায় ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা ও উত্তরার মতো পরিকল্পিত এলাকায়ও নাগরিক সুবিধা কমছে।
ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা ও উত্তরা—পুরো ঢাকা শহরে শুধু চারটি এলাকাই সরকারি উদ্যোগে পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। প্রশস্ত সড়ক, খেলার মাঠ, পার্ক, জলাধার, স্বাস্থ্য–শিক্ষার সুব্যবস্থাসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা এই চার এলাকায় থাকার কথা। কিন্তু নিয়মনীতির ক্ষেত্রে শিথিলতা এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তদারকির অভাবে এসব এলাকাও বাসযোগ্যতা হারাতে যাচ্ছে।
নগর–পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, রাজধানীর পরিকল্পিত চারটি আবাসিক এলাকার (অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত) সামাজিক ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধার প্রায় সব সূচক নিম্নমুখী। এখনই এর রাশ টেনে ধরতে না পারলে এসব এলাকার অবস্থা একসময় পুরান ঢাকার মতো রূপ নিতে পারে।
একসময় ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ছিল পুরান ঢাকা। বুড়িগঙ্গার তীরে প্রায় ৪০০ বছর আগে গড়ে উঠেছিল এ এলাকা। ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় বড় হতে থাকে শহরের কলেবর। সরু গলি ও গায়ে গায়ে লাগানো পুরান ঢাকার বেহাল নাগরিক সুবিধার কারণেই মূলত পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয় পাকিস্তান আমলে। চারটি পরিকল্পিত এলাকার মধ্যে তুলনামূলকভাবে পুরোনো ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা। ১৯৪৮-৪৯ সালে তৎকালীন সরকার জমি অধিগ্রহণ করে এলাকাটির গোড়াপত্তন করেছিল। পরে ষাটের দশকে বিভিন্নজনের নামে প্লট আকারে ধানমন্ডিতে জমি বরাদ্দ (লিজ) দেওয়া হয়।
পরিকল্পিত এলাকার বাসযোগ্যতা কমছে, যা ঢাকা শহরের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে। সরকারের উচিত এসব এলাকার জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সব অনিয়ম বন্ধ করা।
নগর–পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা বলেন, বরাদ্দপত্র অনুযায়ী ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় প্লটের এক-তৃতীয়াংশ বাধ্যতামূলকভাবে ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছিল। ওই সময় পরিবারসংখ্যা ও ভবনের উচ্চতার বিধিনিষেধের কারণে ধানমন্ডিতে জনঘনত্ব ছিল প্রতি একরে ৬৩-৮০ জন। এখন এ এলাকায় ১৪ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যায়। ফলে জনঘনত্ব কয়েক গুণ বেড়েছে, কিন্তু সে অনুযায়ী সামাজিক বা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাসযোগ্যতায়।
নগর বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি এলাকার বা শহরের বাসযোগ্যতা নির্ভর করে সেখানকার জনঘনত্ব (একরপ্রতি কত মানুষের বাস), অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাত্রা বা ধরন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, উন্মুক্ত স্থান, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অবস্থা, আবাসন, সড়ক অবকাঠামো প্রভৃতি সূচকের ওপর। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রক্রিয়াধীন ড্যাপের (বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) গবেষণায় এসব সূচকের ওপর ভিত্তি করে এলাকাভিত্তিক ভারবহন সক্ষমতা নির্ণয় করা হয়েছে। যেখানে ভারবহন সূচকের সর্বোচ্চ মান ধরা হয়েছে ১০০।
ভারবহন সূচকের মান ৮০ পর্যন্ত থাকলে ওই এলাকার বাসযোগ্যতা সহনীয় থাকে বলে জানান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, কোনো এলাকার ভারবহন সূচক ৮০–এর নিচে নামলে বাসযোগ্যতাও কমতে থাকে।
প্রক্রিয়াধীন ড্যাপের গবেষণা অনুযায়ী, ভারবহন সক্ষমতার মানে ধানমন্ডি পেয়েছে ১০০–তে ৬৪। গুলশান-বনানী এলাকা ৬৫, বারিধারা ৫৬ এবং উত্তরা পেয়েছে ৫৯। এ গবেষণা অনুযায়ী, উত্তরায় প্রতি একরে সর্বোচ্চ মানুষ থাকার কথা ১৪৮ জন, থাকেন ২৩০ জন। বারিধারায় ১৩৯ জনের জায়গায় থাকেন ১৯২ জন। তবে গুলশানে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার চেয়ে এখনো কম মানুষ বাস করেন। এখানে একরপ্রতি সর্বোচ্চ ১৬২ জন মানুষ বাস করতে পারবেন, ২০১৮ সালে এই এলাকার জনঘনত্ব ছিল ৮৯। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান হার বজায় থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ গুলশানের জনঘনত্ব সহনীয় মাত্রার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।
ধানমন্ডিতে প্রতি একরে থাকার কথা ছিল সর্বোচ্চ ৮০ জনের। ড্যাপের গবেষণা অনুযায়ী, এই এলাকার সর্বোচ্চ জনঘনত্বের সহনীয় মাত্রা ১৬১ জন। ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, এখানে প্রতি একরে থাকেন ১৪৫ জন। গবেষকেরা বলছেন, ধানমন্ডি ধীরে ধীরে আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হচ্ছে। যে উদ্দেশ্যে এলাকাটি করা হয়েছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই।
ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের পাশে বাংলাদেশ আই হসপিটাল। হাসপাতালটির উত্তর পাশের সরু গলি ধরে পশ্চিম দিকে এগোলে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৯/এ নম্বর সড়ক। সড়কের শুরুতেই গায়ে গা লাগানো বহুতল ভবন। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা।
এ সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ভবন আছে প্রায় ৮০টি। বেশির ভাগই ৬ থেকে ১০ তলা। তবে পুরোনো ৭-৮ ভবন এখনো টিকে আছে। এর একটি ১০০ নম্বর বাড়ি। দ্বিতল এই বাড়িটির সামনের একটি অংশ এখনো ফাঁকা; সেখানে আছে নারকেল, কৃষ্ণচূড়াসহ বেশ কয়েকটি গাছ। তার ঠিক পাশেই একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটির উচ্চতা পুরোনো বাড়ির নারকেলগাছের উচ্চতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু নতুন ভবনের সামনে কোনো ফাঁকা জায়গা নেই, ফলে সবুজ গাছপালাও নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ৯/এ সড়ক এলাকার বিভিন্ন ভবনে অন্তত দুই হাজারের বেশি মানুষের বাস। কিন্তু তাঁদের জন্য কোনো মাঠ, পার্ক কিছুই নেই, একটু দূরে আবাহনী মাঠ থাকলেও সেটি তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন না।
এ সড়কের দুই পাশে দেখা গেছে সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি কমিউনিটি সেন্টার ও শরীরচর্চা কেন্দ্র। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু থাকলে সড়কজুড়ে তৈরি হয় যানজট।
বাসযোগ্যতায় টান
বাসযোগ্যতার বিচারে পরিকল্পিত এলাকাগুলোর পিছিয়ে পড়ার পেছনে নানা বিষয় জড়িত। তবে মোটা দাগে এসব এলাকার ভবনের উচ্চতা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নিয়ম না মেনে অবকাঠামো তৈরি এবং আবাসিক এলাকার বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিকল্পিত এ এলাকাগুলোর একটি চিত্র পাওয়া যায় প্রক্রিয়াধীন ড্যাপে। গত সেপ্টেম্বরে ড্যাপের একটি খসড়া প্রকাশ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এতে গুলশান, বনানী ও বারিধারাকে রাজউকের ঢাকা উপ-অঞ্চল–৬–এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই উপ-অঞ্চলে গুলশান, বনানী ও বারিধারার সঙ্গে এর আশপাশের এলাকাও যুক্ত করা হয়েছে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড)। ড্যাপে বলা হয়েছে, এই উপ-অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আগামী বছর ২৪টি সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজন হবে, কিন্তু আছে মাত্র ৪টি। খেলার মাঠের প্রয়োজন হবে প্রায় ১১২ একর, আছে মাত্র ১৫ দশমিক ৩৪ একর। পার্ক দরকার প্রায় ৬০ একর, আছে প্রায় ১৬ একর।
খসড়া ড্যাপ অনুযায়ী, এই উপ-অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থান আছে মোট ভূমির মাত্র ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ, জলাধার আছে প্রায় ৯ শতাংশ, পরিবহন ও যোগাযোগে ব্যবহৃত হয় মোট ভূমির ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অন্যদিকে ধানমন্ডি-নিউমার্কেট এলাকাকে ড্যাপের খসড়ায় ঢাকা উপ-অঞ্চল ১৭ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ এলাকাতেও মানুষের চাহিদার প্রায় অর্ধেক খেলার মাঠ আছে, পার্কের অবস্থাও প্রায় একই রকম। তবে চাহিদার তুলনায় দুটি কমিউনিটি সেন্টার বেশি আছে। জলাধার আছে মোট ভূমির ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ, উন্মুক্ত স্থান ৩ শতাংশের একটু বেশি, পরিবহন ও যোগাযোগে ব্যবহৃত হয় ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভূমি।
সম্প্রতি এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে শুধু উত্তরা এলাকায় (ডিএনসিসির ওয়ার্ড নম্বর ১) নাগরিক সুযোগ-সুবিধার তথ্য প্রকাশ করেছিল বিআইপি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরায় চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল-ক্লিনিকের ঘাটতি আছে ৬২ শতাংশ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ঘাটতি ৩৭ শতাংশ, পার্কের ঘাটতি ৭৫ শতাংশ ও খেলার মাঠের ঘাটতি আছে ৮৭ শতাংশ। তবে চাহিদার তুলনায় স্কুলের সংখ্যা বেশি উত্তরায়।
পরিকল্পিত এলাকায়ও খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করে তা ‘প্লটে’ রূপান্তর করা হয়েছে। এতে মানুষ বেড়েছে, আবার নিয়মনীতি না মেনে একের পর এক বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এসব অনিয়ম রোধে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বছরের পর বছর এ অবস্থা চলে আসায় পরিকল্পিত এলাকার বাসযোগ্যতা কমছে, যা ঢাকা শহরের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে। সরকারের উচিত এসব এলাকার জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সব অনিয়ম বন্ধ করা
পরিকল্পিত পূর্বাচল নিয়েও শঙ্কা
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আবাসিক প্রকল্প হচ্ছে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের অংশে বিস্তৃত এই প্রকল্পের আয়তন প্রায় ৬ হাজার ২২৭ একর। এ প্রকল্পে আবাসিক প্লট আছে ২৫ হাজারের বেশি। তবে দুই যুগেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে প্রকল্পের নকশা সংশোধন করা হয়েছে পাঁচ দফা। শুরুর পরিকল্পনা অনুযায়ী, পূর্বাচলে ১০ লাখ মানুষ বাস করবে, এমনটি ধরেই নকশা ও ভূমি বিন্যাস করা হয়। কিন্তু রাজউকের এক বোর্ড সভায় ১০ লাখের জায়গায় মানুষ ধরা হয় ১৫ লাখ।
নগর বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, ১৫ লাখ মানুষের কথা বলা হলেও বর্তমান ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী পূর্বাচল গড়া হলে এ এলাকায় অন্তত ২০-২৫ লাখ মানুষ বাস করবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নাগরিক পরিষেবায় চাপ পড়বে।
করুণ অবস্থা পুরান ঢাকার
ঢাকা শহরের গোড়াপত্তন হয়েছিল যে এলাকা কেন্দ্র করে, কালের বিবর্তনে এই এলাকা এখন বাসযোগ্যতার একেবারে তলানিতে। পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার অংশে প্রতি একরে ৫৫০-৭০০ মানুষ বাস করে। জলাবদ্ধতার সমস্যা, পায়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থায় দুর্বলতা ও বর্জ্য ফেলার জায়গার অভাবসহ নানা সংকটে বিপর্যস্ত পুরান ঢাকা। অপরিকল্পিত অবকাঠামোর কারণে এ এলাকায় খেলার মাঠ, পার্ক, জলাধার নেই বললেই চলে। চলাচলও এ এলাকার বড় একটি সমস্যা।
ড্যাপের তথ্য অনুযায়ী, পুরান ঢাকার ২৯ শতাংশ সড়কের প্রশস্ততা ৮ ফুটেরও কম। এ এলাকায় উন্মুক্ত স্থান মোট ভূমির মাত্র ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, জলাধারের পরিমাণ আরও কম (১ দশমিক ৮৫ শতাংশ)। এ ছাড়া শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিনোদন–সুবিধার—প্রতিটি ক্ষেত্রেই আছে ঘাটতি।
এলাকাভেদে পুরান ঢাকার ভারবহন ক্ষমতার মান (১০০) সর্বোচ্চ ৫০ ও সর্বনিম্ন ৩৫। সবচেয়ে বেশি ভারবহন ক্ষমতা বংশালের একটি অংশের (ডিএসসিসি ওয়ার্ড-৩৩)। অর্থাৎ পুরান ঢাকার মধ্যে এই এলাকাই সবচেয়ে বেশি বাসযোগ্য। অন্যদিকে ভারবহন ক্ষমতা বা বাসযোগ্যতায় সবচেয়ে পিছিয়ে চকবাজার।
ঢাকার সার্বিক চিত্র
কোনো শহর কতটা বাসযোগ্য, এ নিয়ে প্রতিবছর বৈশ্বিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। প্রতিষ্ঠানটি একটি শহরের বাসযোগ্যতার মাত্রা নির্ধারণে ওই শহরের অবকাঠামো, স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং পরিবেশকে বিবেচনায় নেয়। বিশ্বের ১৪০টি শহর নিয়ে হয় এ গবেষণা।
ইআইইউর সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন (২০১৯ সাল) অনুযায়ী, খারাপ অবস্থার দিক থেকে ঢাকার অবস্থান ১৩৮তম। ঢাকার পরের দুটি শহরের একটি নাইজেরিয়ার লাগোস, অন্যটি যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার দামেস্ক।
রাজধানীর বাসযোগ্যতা নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিত এলাকায়ও খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করে তা ‘প্লটে’ রূপান্তর করা হয়েছে। এতে মানুষ বেড়েছে, আবার নিয়মনীতি না মেনে একের পর এক বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এসব অনিয়ম রোধে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বছরের পর বছর এ অবস্থা চলে আসায় পরিকল্পিত এলাকার বাসযোগ্যতা কমছে, যা ঢাকা শহরের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে। সরকারের উচিত এসব এলাকার জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সব অনিয়ম বন্ধ করা।