২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ঢাবির হলে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীর থাকতে মানা, বিবাহিতরা পারেন ‘বিশেষ ক্ষেত্রে’

ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলে আসন বণ্টন–সম্পর্কিত নীতিমালার একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়মভঙ্গের কারণে তাঁর সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না।’ এ নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাঁচ ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা নিয়ম বাতিলের আবেদন জানিয়ে উপাচার্যের কাছে যান।

উপাচার্য তাঁদের বলেছেন যে কিছু লোকের হঠকারী চিন্তায় কিছু করা যাবে না। হল কর্তৃপক্ষ ও ডিনস কমিটির সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এ নিয়মই বলবৎ থাকবে।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বরাবর দেওয়া এক আবেদনে পাঁচ ছাত্রী হলের ছাত্রী প্রতিনিধিরা বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের ক্ষেত্রে থাকা ওই নিয়মটি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন। উপাচার্য ছাত্রীদের বলেছেন, হল কর্তৃপক্ষ ও ডিনস কমিটির সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এ নিয়মটিই বলবৎ থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অন্য তিন দাবি হলো শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবকের’ পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করা ও জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য থাকা পাঁচটি হল হচ্ছে রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল, কবি সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল। বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি শামসুন নাহার হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের দুই ছাত্রীর সিট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষাপটে ছাত্রীরা বিবাহিত ছাত্রীদের ক্ষেত্রে থাকা নিয়মটি বাতিলের আবেদন নিয়ে উপাচার্যের কাছে যান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অন্য তিন দাবি হলো শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবকের’ পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করা ও জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।

যেসব ছাত্রী গতকাল লিখিত আবেদন নিয়ে উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের একজন শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ। তিনি বলেন, উপাচার্য তাঁদের বলেছেন যে কিছু লোকের হঠকারী চিন্তায় কিছু করা যাবে না। হল কর্তৃপক্ষ ও ডিনস কমিটির সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এ নিয়মই বলবৎ থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ১৩টি হলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের বড় অংশই বছরের পর বছর হলগুলোতে থাকেন। ফলে সিট সংকটের কারণে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় ‘গণরুমে’। পাশাপাশি তাঁদের ‘গেস্টরুমের’ বিভীষিকা পোহাতে হয়। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কর্মসূচিতে না গেলে নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।

ছাত্রী হলগুলোতে এ চিত্র কিছুটা ভিন্ন। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর ছাত্রীদের বড় অংশই হলের সিট ছেড়ে দেন। ফলে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্রীরা কয়েক মাসের মধ্যেই হলে বৈধ সিট পেয়ে যান। তবে অভিযোগ আছে, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেত্রীরা ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও বছরের পর বছর হলে থাকেন। সাধারণ ছাত্রীদের ক্ষেত্রে নিয়মের কড়াকড়ি থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেত্রীদের ব্যাপারে হল প্রশাসনগুলো নির্বিকার।