ছিনতাই ঠেকাতে...
খিলক্ষেত থানা থেকে বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত রাস্তাটুকুতে ছিনতাইরোধে ১০ সদস্যের একটি কার্যকর কমিটি গঠিত হয়েছে। পুলিশ ও সাইক্লিস্টদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি ছিনতাইকারীদের শনাক্তেও একত্রে কাজ করবে।
গত রোববার সকালে খিলক্ষেত থানায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাইক্লিস্টদের এক পূর্বনির্ধারিত সভা থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১০ সদস্যের কমিটিতে খিলক্ষেত ও বিমানবন্দর থানার তিনজন করে পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিডিসাইক্লিস্টসের চারজন সদস্য রয়েছেন।
প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় নিয়মিত ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছিলেন সাইকেলচালকেরা। পথটুকু পাড়ি দিতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের রক্তাক্ত হামলার শিকারও হয়েছেন অনেকে। ভুক্তভোগী সাইক্লিস্টদের অভিযোগ ছিল, ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও তাঁরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছিলেন না। মামলা করতে চাইলেও পুলিশ নিচ্ছিল জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার সাধারণ ডায়েরি (জিডি)।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার তৎপরতার মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে ঘটে চলা এই ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর ‘ভীতিকর তিন কিলোমিটার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। পুলিশের কাছ থেকে প্রতিকার না পেয়ে সাইক্লিস্টরা পরবর্তী সময়ে দল বেঁধে যাতায়াত শুরু করেন। এ নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর ‘ছিনতাই এড়াতে দল বেঁধে চলছেন সাইক্লিস্টরা’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। ছিনতাই বন্ধে পুলিশের নির্লিপ্ততা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনা হওয়ার পর কমিটি গঠনের এই উদ্যোগ নেওয়া হলো।
রোববারের সভায় ১১ জন সাইক্লিস্ট অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনার ভুক্তভোগী যেমন ছিলেন, তেমনি থানায় গিয়ে পুলিশের সহায়তা না পাওয়া ভুক্তভোগীও ছিলেন। সভায় সাইক্লিস্টদের প্রতিনিধিত্ব করেন বিডিসাইক্লিস্টসের মডারেটর ফুয়াদ আহসান চৌধুরী। আর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান অঞ্চলের উপকমিশনার (ডিসি) মুশতাক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ফুয়াদ আহসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ছিনতাই বাড়ার কারণে অফিসগামী সাইক্লিস্টরা সাইকেল চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আরও অনেকে সাইকেল চালানো বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। সভায় সাইক্লিস্টরা তাঁদের অভিযোগ পুলিশকে জানিয়েছেন। এখন থেকে কোনো সাইক্লিস্ট ছিনতাইয়ের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা থানায় জানাবেন। থানা-পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। ভুক্তভোগী মামলা বা জিডি যা-ই করতে চান, পুলিশ তাঁদের সহায়তা করবে। যদি কোনো কারণে পুলিশ সহায়তা না করে, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি তাঁরা গুলশান অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে জানাবেন।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ওই জায়গায় তাঁরা টহল ও নজরদারি এরই মধ্যে বাড়িয়েছেন। তা ছাড়া সাইক্লিস্টদের সঙ্গে সাদাপোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দারা থাকবেন।