গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় আইন ও নীতি প্রণয়নের দাবি

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিলস আয়োজিত আলোচনা সভায় গৃহশ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন বক্তারা
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

গৃহশ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। পাশাপাশি গৃহশ্রমিকদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘মহান মে দিবসের চেতনা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক হিসেবে গৃহশ্রমিকদের অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

এ সময় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘গৃহশ্রমিকদের এখনো আমরা শ্রমিক হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। শ্রম আইন সংশোধনের জন্য আমরা নানা সুপারিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু যখন সংসদে উঠল, তখন আর সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা হলো না।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকেরা লড়াই করে তাঁদের অধিকার আদায় করে নিয়েছেন। গৃহশ্রমিকদেরও তাঁদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আইন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো হয়নি। আইন করতে হলে গৃহশ্রমিকদের সংগঠিত হতে হবে। শ্রমিক আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত জোরদার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইন আসবে না।’

সভায় বিলসের নির্বাহী পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, ‘গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এটা করা হচ্ছে না। প্রায় ৮০ লাখ মানুষ গৃহশ্রমিকের কাজ করছেন। সমাজে তাঁদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা উচিত।’

গৃহশ্রমিক খোঁজার অ্যাপস হ্যালোটাস্কে কাজ করা গৃহশ্রমিক ফাতেমা বলেন, ‘আমাদের যা প্রয়োজন, তার সব এখান থেকে আমরা পাচ্ছি। আগেও আমি অনেক জায়গায় কাজ করেছি। কিন্তু তখন এত ভালো ছিলাম না। হ্যালোটাস্কের মাধ্যমে আমরা ভালো বেতনও পাচ্ছি, মর্যাদাও পাচ্ছি।’

বিলসের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিলসের পরিচালক নাজকা ইয়াসমিন, নির্বাহী পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সমাজে গৃহশ্রমিকদের সম্মানজনক অবস্থান তৈরির মাধ্যমে দেশের নারী গৃহশ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ সাধনে গৃহশ্রমিকদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের দাবি জানান বক্তারা। পাশাপাশি জিডিপিতে গৃহশ্রমিকদের অবদান পৃথকভাবে চিহ্নিত করা, সাপ্তাহিক, অসুস্থতাজনিত, মাতৃত্বকালীন ও উৎসব ছুটি বাধ্যতামূলক করার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া গৃহকর্মীদের আইনি সুরক্ষা, চাকরির নিয়োগপত্র, রাষ্ট্র কর্তৃক আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন, যথাসময়ে বেতন নিশ্চিত করা ও প্রশিক্ষণের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।