সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনতে কূটনৈতিক আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এ ছাড়া অবৈধভাবে সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ না করতে সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্নভাবে তাঁদের সচেতন করার কাজ করছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে এবং শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত করে তুলতে হবে। এতে সীমান্ত হত্যা অনেকাংশে কমে যাবে।
আজ রোববার সকালে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সকাল নয়টায় মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিজিবি দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়।
বিজিবি সদস্যদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্ব প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেছে। বিজিবিকে এগিয়ে নিতে হলে এদিকে মনোযোগ দিতে হবে। দেশের সীমানায় কিছু স্থান এখনো অরক্ষিত। সেখানে বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) স্থাপন করা গেলে সীমান্তে হত্যাসহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১০০ জেলেকে নৌকা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাঁদের মাছ ধরার জাল দেওয়া হবে। দেশের জেলেরা দাদনের ফেরে নিঃস্ব হয়ে যান। দাদন থেকে মুক্ত হয়ে তাঁরা যাতে জীবিকা চালাতে পারেন, সে জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবার বিজিবি দিবস জমকালোভাবে উদ্যাপন করা হয়। এ বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সীমিত আকারে দিবসটি পালন করা হচ্ছে বলে জানান মহাপরিচালক। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে এবারের দিবস পালন করা হয়েছে।
বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিজিবি সদস্যদের আগামী দিনগুলোয় সরকারের অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক। তিনি বিজিবি সদস্যদের দৃঢ় মনোবল নিয়ে সততা, নিষ্ঠা ও আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানান।
দরবার শেষে অনারারি সুবেদার মেজর থেকে অনারারি সহকারী পরিচালক এবং অনারারি সহকারী পরিচালক থেকে অনারারি উপপরিচালক পদে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের র্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়। শ্রেষ্ঠ রিক্রুট প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দলগত ও ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান, অপারেশনাল কার্যক্রম, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান, শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়ন ও রানারআপ ব্যাটালিয়নকে পুরস্কার প্রদান, শ্রেষ্ঠ কোম্পানি ও বিওপি কমান্ডারদের পুরস্কার প্রদান, মহাপরিচালকের অপারেশন ও প্রশাসনিক ইনসিগনিয়াসহ প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া বিজিবি দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে পিলখানাসহ বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও প্রতিষ্ঠানে কেক কাটা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
মাগরিবের নামাজের পর বিজিবির সব মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে মিলাদ ও বিশেষ দোয়া করা হবে।