অবাধ নির্বাচনে মাহবুব তালুকদারের পাঁচ 'নি'
অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী ব্যবস্থাপনাকে পাঁচটি ‘নি’ দিয়ে সংজ্ঞায়িত করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
আজ রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নতুন যোগ দেওয়া ৪৯ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ১২ দিনব্যাপী এক কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাহবুব তালুকদার তাঁর পাঁচ ‘নি’ উপস্থাপন করেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, প্রথম ‘নি’ হচ্ছে ‘নিশ্চয়তা’—এটা নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা। এ নিশ্চয়তার অর্থ ভোটার ও রাজনৈতিক দলের আস্থা সৃষ্টি। দ্বিতীয় ‘নি’ হচ্ছে ‘নিরপেক্ষতা’—নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া ও ভোট কার্যক্রম চালানোর প্রতিশ্রুতি। কমিশনের পক্ষে এই নিরপেক্ষতা অপরিহার্য। তৃতীয় ‘নি’ হচ্ছে ‘নিরাপত্তা’—এই নিরাপত্তা ভোটার, রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকরভাবে নির্বাচনকালে কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা দরকার। চতুর্থ ‘নি’ হচ্ছে ‘নিয়ম-নীতি’—নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোরভাবে বিধিবিধান পরিচালনের আওতায় আনা প্রয়োজন। পঞ্চম ‘নি’ হচ্ছে ‘নিয়ন্ত্রণ’—নির্বাচন অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। স্বনিয়ন্ত্রণই নির্বাচন কমিশনের মূল কথা।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বর্তমান কমিশনের তিন বছর পূর্তি হয়েছে। এই তিন বছরে কমিশনের অনেক অর্জন আছে। বিসর্জনও আছে। তিনি কোনো মূল্যায়ন করতে যাচ্ছেন না। তবে আগামী দুই বছর যাতে কমিশনের অর্জনের পাল্লা ভারী হয়, সেটাই তাঁর প্রত্যাশা।
এই কমিশনার বলেন, সংবিধান বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে যে অপরিমেয় ক্ষমতা দিয়েছে, পৃথিবীর খুব কম দেশের কমিশন এমন ক্ষমতায় অধিকারী। এমনকি ভারতের কমিশনও এত ক্ষমতার অধিকারী নয়।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলেই কেবল হবে না। ক্ষমতার প্রয়োগ না হলে সে ক্ষমতা অর্থহীন। বর্তমান কমিশন তার ক্ষমতার কতটুকু প্রয়োগ করতে পেরেছে, তা সময়ই বিচার করতে পারবে।
গণতন্ত্র-নির্বাচন অভিন্ন সূত্রে বাঁধা উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমরা কোনো অবস্থাতেই মানুষের ভোটাধিকার লঙ্ঘিত ও ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না।’
মাহবুব তালুকাদরে বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় নিশ্চয়তা, নিরপেক্ষতা, নিরাপত্তা, নিয়মনীতি ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, তাই গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আমার কোনো অবস্থাতেই মানুষের ভোটাধিকারকে লঙ্ঘিত ও ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না।’