জলবায়ুসহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবন: একত্রে কাজ করবে ব্র্যাক ও জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট প্রকল্প
যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিউনিটি জামিল ‘কার্যকর জলবায়ুসহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট’ শীর্ষক একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠান দুটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জলবায়ুসহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ চলবে। আজ সোমবার ব্র্যাকের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট প্রকল্পটির পুরো নাম দ্য জামিল অবজারভেটরি ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্স আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম নেটওয়ার্ক। যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ উদ্যোগে অ্যাগ্রিকালচার ইনোভেশন ফর ক্লাইমেট (এআইএমফরসি) আয়োজিত ২০২৩ সামিটে প্রকল্পটি ‘ইনোভেশন স্প্রিন্ট’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। ইনোভেশন স্প্রিন্টে সংক্ষিপ্ত সময় ধরে নতুন ধারণা ও সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও সুদানে বাস্তবায়িত হবে। বাংলাদেশে এর অংশীদার ব্র্যাক ও সুদানে এর অংশীদার দেশটির সরকারি কৃষি গবেষণা সংস্থা অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ কো-অপারেশন সুদান। এমআইটির আবদুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব (জে-প্যাল) প্রকল্পটিতে যুক্ত থাকবে।
প্রকল্পপ্রধান এমআইটির পানিবিজ্ঞান ও জলবায়ুবিষয়ক অধ্যাপক আলফাতিহ আলতাহির বলেন, ‘এআইএমফরসি সম্মেলন আমাদের জন্য চমৎকার এক সুযোগ এনে দিয়েছে। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা দেশগুলোয় কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীর সামর্থ্য উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহীদের জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট প্রকল্পের পরিকল্পনা ও প্রাথমিক কাজগুলো সম্পর্কে জানাব আমরা।’
কমিউনিটি জামিলের পরিচালক জর্জ রিচার্ডস বলেন, এমআইটি, ব্র্যাক ও অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ কো-অপারেশন সুদানের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত। এই প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উত্তরোত্তর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীকে জলবায়ুসহিষ্ণু প্রযুক্তি ও পন্থা গ্রহণে সহযোগিতা করবে।
ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন, নগর উন্নয়ন ও দুর্যোগঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পরিচালক মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘বাংলাদেশে জলবায়ুঝুঁকি মোকাবিলারত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছে ব্র্যাক। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় মানুষের নেতৃত্বে উদ্ভাবিত ও বাস্তবায়িত জলবায়ুসহিষ্ণু পন্থা কীভাবে জীবন-জীবিকাকে সুরক্ষিত রাখে, তা আমরা দেখেছি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের কার্যকর মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এই উদ্যোগ। কমিউনিটি জামিল ও এমআইটির সঙ্গে এতে যৌথভাবে কাজ করতে পেরে ব্র্যাক গর্বিত।’
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কাজের ক্ষেত্রে জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট প্রকল্প-পরবর্তী প্রজন্মের জলবায়ু পূর্বাভাস, পূর্বাভাসমূলক উপাত্ত বিশ্লেষণ, নতুন প্রযুক্তি এবং অর্থায়নমূলক পন্থাগুলোকে একীভূত করবে। সুদানে প্রকল্পটি উন্নত জাতের তাপসহিষ্ণু বীজ পেতে আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ, বিশেষ ধরনের সার ব্যবহার, ডেটা মডেলিংয়ের সঙ্গে মাটির উর্বরতা ম্যাপিং এবং প্রচলিত আনুভূমিক কৃষিপদ্ধতির চেয়ে স্তরীকৃত সম্প্রসারণে জোর দেবে।
জামিল অবজারভেটরি ক্রুসনেট প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলারত স্থানীয় কৃষিভিত্তিক জনগোষ্ঠী এবং এমআইটির মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জ্ঞানের ব্যবধান পূরণ করতে চায়। কার্যকর জ্ঞান বিনিময় ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে প্রকল্পটি কৃষকের সামর্থ্য বৃদ্ধি করতে চায়, যাতে তাদের উৎপাদনশীলতা ও আয় উভয়ই টেকসইভাবে বৃদ্ধি পায়।