রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসড়কের গার্ডারের চাপায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে অপেক্ষায় স্বজনেরা।
লাশ নিতে এসে আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মর্গের সামনে বসে আহাজারি করছিলেন নিহত আইয়ুব আলীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার। এ সময় মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত চলছিল।
বিলাপ করতে করতে রেহেনা আক্তার বলেন, ‘আমি বিচার চাই। স্বামী হত্যার বিচার চাই। বিচার ছাড়া তো আর কিছু চাওয়ার নেই। আমি চাই, আমার মতো এমন ঘটনা যেন আর কারও জীবনে না ঘটে।’
গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি প্রাইভেট কার সড়ক ধরে যাচ্ছিল। এ সময় বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসড়কের গার্ডার ওঠানোর কাজ করা একটি ক্রেন কাত হয়ে যায়। এতে গার্ডারটি গাড়িটিকে চাপা দেয়।
গার্ডারের চাপায় প্রাইভেট কারের পাঁচ আরোহী নিহত হন। আহত হন দুজন। নিহত ও আহত আরোহীরা সবাই পরস্পরের স্বজন।
আইয়ুব ছাড়াও নিহত হয়েছেন তাঁর ছেলে হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা আক্তার (৩৮), খালাশাশুড়ি ঝর্ণা আক্তার (২৭), ঝর্ণার দুই সন্তান জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪)। প্রাণে বাঁচেন হৃদয় ও তাঁর স্ত্রী রিয়া মনি (২১)। তবে তাঁরা আহত হন।
গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আইয়ুব। তাঁর স্ত্রী রেহেনা বলেন, ‘আমার ছেলের (হৃদয়) বউভাত হয় গতকাল। অনুষ্ঠানে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া করেছি। স্বামী, ছেলে, ছেলেবউ নিয়ে খেয়েছি। স্বামীর সঙ্গে সেটাই ছিল আমার শেষবারের মতো খাওয়াদাওয়া।’
রেহেনা আরও বলেন, তাঁর স্বামী তাঁকে অনেক আগে বলেছিলেন, তিনি যদি কখনো তাঁর আগে মারা যান, তাহলে যেন মা–বাবার পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
হৃদয় ও রিয়া মনির বিয়ে হয় গত শনিবার। গতকাল দক্ষিণখানের কাওলায় ছিল বউভাতের অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা গাড়িতে মেয়ের বাড়ি আশুলিয়ায় ফিরছিলেন। হৃদয়ের বাবা ছেলে ও ছেলের বউকে গাড়িতে করে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। এ সময় দুর্ঘটনা ঘটে।