পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ৫ প্রস্তাব

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনছবি: প্রদীপ সরকার

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দেশে ন্যায়বিচার, শান্তি ও জাতীয় ঐক্যের জন্য নতুন করে আশা তৈরি করেছে।

খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন সরকারের অভিযাত্রায় আমরা ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার নতুন বাঁকে দাঁড়িয়ে আছি। ২৬ বছর ধরে এই চুক্তির মূল উপাদানগুলো অনেকাংশে অবাস্তবায়িত রয়ে গেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি আদিবাসী জনগণ এবং সারা দেশের নাগরিকদের এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। এই চুক্তির পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যই নয়, বাংলাদেশের সব আদিবাসীর মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখা এবং একই সঙ্গে দেশের জাতীয় ঐক্যের জন্য অপরিহার্য।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মসূচিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার জন্য ৫ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।

প্রথম, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটির পুনর্গঠন করা। কারণ, বর্তমান কমিটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।

দ্বিতীয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সক্রিয় করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে অমীমাংসিত ভূমি বিরোধ পাহাড়িদের জন্য দুর্দশা ও বাস্তুচ্যুতির কারণ হয়েছে।

তৃতীয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে অবিলম্বে গঠনমূলক সংলাপ শুরু করার জন্য জোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সংলাপের উদ্দেশ্য হবে চলমান সমস্যাগুলোর সমাধান, পার্বত্য চুক্তির বিধানগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক পরিষদের প্রচেষ্টার সমন্বয় করা এবং স্থানীয় শাসনে পরিষদের ভূমিকা নিশ্চিত করা।

চতুর্থ, আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে সংলাপের আলোকে, চুক্তির বিধান অনুসারে অনতিবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম, সমতল ভূমিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী তাদের ভূমির অধিকার এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার হুমকিসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমরা অন্তর্বতী সরকারকে এসব জাতির সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি কমিশন গঠনের আহ্বান জানাই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, মানবাধিকারকর্মী মেইন থিন প্রমীলা। মানবাধিকারকর্মী দীপায়ন খীসাসহ অনেকেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।