প্রবল ভালোবাসাই পারে সমাজকে বৈষম্য থেকে মুক্ত করতে: আনু মুহাম্মদ

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ‘সমগীতের’ উদ্যোগে আয়োজিত বসন্ত উৎসবের বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪ ফেব্রুয়ারিছবি: আশরাফুল আলম

ভালোবাসা যত প্রবল হবে; ভালোবাসাবিরোধী, মানুষবিরোধী, প্রাণ-প্রকৃতিবিরোধী শক্তিগুলো তত দুর্বল হবে। প্রবল ভালোবাসাই এই সমাজকে শোষণ, নিপীড়ন ও বৈষম্য থেকে মুক্ত করতে পারে।

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত বসন্ত উৎসবে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সমগীতের’ উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবারও বসন্ত উৎসবের আয়োজন হয়। ‘এসো জুলাইয়ের চৈতন্যে গড়ি বৈষম্যহীন সংস্কৃতির জমিন’ স্লোগানে আয়োজিত এবারের বসন্ত উৎসব জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। এবারের আয়োজনের শিরোনাম ‘জুলাই অভ্যুত্থান আমার দ্রোহ ভালোবাসার গান’।

অনুষ্ঠানে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘ভালোবাসার বিস্তার ঘটুক। আমাদের সংস্কৃতি আরও বেশি ভালোবাসাকে ধারণ করুক। মানুষের প্রতি ভালোবাসা অমানুষের বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করুক।’

আয়োজনের শুরুতে বেহালায় রাগ বৃন্দাবনী সারং–এর সুর তোলেন বিদ্যুৎ সরকার ও পিয়াস আকবর। অনুষ্ঠানে আদিবাসী বোতলনাচ পরিবেশন করেন সাচিং মং মারমা। সমগীতের কিশোর ব্যান্ড গঙ্গাফড়িং গান পরিবেশন করে।

আয়োজনের বিশেষ পর্বে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকে ‘সমগীত শ্রদ্ধার্হ্য’ নিবেদন করা হয়। এই পর্বে আলোচক ছিলেন নিউজ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকে ‘সমগীতের’ পক্ষ থেকে ‘শ্রদ্ধার্হ্য পত্র’ দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি
ছবি: আশরাফুল আলম

নূরুল কবীর বলেন, যে দাবিগুলো নিয়ে নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সে সময় সরকারের পতন ঘটানো হয়েছিল, যেসব দাবির জন্য সে সময় ৯ বছরে প্রায় ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই দাবিগুলো নিয়ে বছরের পর বছর সংগ্রাম হতে হতে এই গণ-অভ্যুত্থানেও তরুণেরা রক্ত দিয়েছে। কিন্তু দাবিগুলো প্রায় একই রয়ে গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আর কতকাল লড়াই? তিনি আরও বলেন, ‘প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের মাঝখানে অনেকে ঝরে যায়। কিন্তু যারা ঝরে পড়ে না, তাদের একজন আনু মুহাম্মদ। আমি মনে করি, তাঁকে সম্মানিত করে সমগীত নিজেও সম্মানিত হয়েছে।’

‘শ্রদ্ধার্হ্য’ গ্রহণের পরে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের লড়াই বহুদিন চলছে, এই লড়াই চলবে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই লড়াই।’

আরও বক্তব্য দেন কবি ও শিল্পী কফিল আহমেদ, সমগীতের সভাপ্রধান দিনা তাজরিন। আলোচনা পর্ব শেষে ‘শ্রদ্ধার্হ্য পত্র’ পাঠ করেন সমগীতের সহ–সভাপ্রধান রেবেকা সুলতানা। পর্বটি পরিচালনা করেন তোফাজ্জল হোসেন৷

এরপর একে একে গান পরিবেশন করেন শিল্পী কফিল আহমেদ, লীলা, কৃষ্ণকলি, গানের দল সমগীত, আদিবাসী ব্যান্ড রেরে, সুডোস অন আ রং রুট, অমৌলিক। এ ছাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন আকরামুল হিজড়া।