বইমেলায় ১২ প্রকাশনীর জন্য পরিসর বাড়ল
অমর একুশে বইমেলায় ১২টি প্রকাশনীর জন্য পরিসর বাড়ানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পরিচালনা কমিটির চতুর্থ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্যপ্রকাশ ও আগামী প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন ২০ ফুট বাই ২০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ২৪ ফুট বাই ২৪ ফুট করা হচ্ছে। কাকলী প্রকাশনী, পাঠক সমাবেশ, পুথিনিলয়, সময় প্রকাশন ও নালন্দাকে ৪ ইউনিটের পরিবর্তে ২০ ফুট বাই ২০ ফুটের প্যাভিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে। শব্দশৈলীও ৩ ইউনিট থেকে এখন ২০ ফুট বাই ২০ ফুট প্যাভিলিয়ন পাচ্ছে। এ ছাড়া জিনিয়াস পাবলিকেশন্স, জনতা প্রকাশ (শিশু), ময়ূরপঙ্খী (শিশু) আগের নির্ধারিত ২ ইউনিট থেকে এখন ৩ ইউনিট পাচ্ছে। বাবুইয়ের (শিশু) জন্য আরেক ইউনিট বাড়িয়ে ২ ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবিতে তৈরি করা ১৮টি প্রকাশনীর মধ্যে ১২টির জন্য পরিসর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এসব প্রকাশনীকে তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি মেলায় আজীবনের জন্য অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা এবং মেলায় প্রকাশনীগুলোকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ না করে ইউনিট দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল সৃজনশীল প্রকাশকদের নিয়ে গঠিত তিনটি সংগঠন। প্রকাশনীগুলোকে আগের বছরগুলোর তুলনায় স্থান কমিয়ে এবারের মেলায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মেলা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মেলায় স্টল বরাদ্দের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করে। সে তালিকায় দেখা যায়, অতীতে প্যাভিলিয়ন পাওয়া অনিন্দ্য, অন্বেষা প্রকাশন, তাম৶লিপি, পাঠক সমাবেশসহ বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থাকে তিন থেকে চার ইউনিট করে স্টলের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্যাভিলিয়ন পেলেও আয়তন কমানো হয়েছিল আগামী ও অন্যপ্রকাশের জন্য। ১৪টি প্রকাশনা সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন থেকে সরিয়ে তিন থেকে চার ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দিয়েছিল মেলা পরিচালনা কমিটি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ দফা দাবি জানিয়েছিল ‘সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকবৃন্দ’ নামের প্ল্যাটফর্ম। গত রোববার বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সরকার আমিনের কাছে এসব দাবি উপস্থাপন করে তারা। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল প্যাভিলিয়ন/স্টল অবনমনকৃত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বরাদ্দ আগের বছরের মতো করে পুনর্বহাল; অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য নিরপেক্ষ কমিটি গঠন; বইমেলা প্রাঙ্গণে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এই প্রকাশকেরা বিগত সরকারের আমলে সরকারের সুবিধাভোগী বলে অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশনীসহ তিন সংগঠন। প্রতীকী অনশন, প্যাভিলিয়নের ধরনের পরিবর্তন এবং ১৮টি প্রকাশনীকে কালো তালিকাভুক্ত করা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা–সমালোচনা। এ নিয়ে কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যান দেশের সৃজনশীল প্রকাশকেরা।
নতুন করে পরিসর বাড়ানো প্রসঙ্গে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সরকার আমিন বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। যথাসম্ভব সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষে স্থান সংকুলানের মধ্যেও সবাইকে স্থান করে দেওয়ার জন্য এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।’