ছোট্ট আয়েশা আইসিইউতে, অবস্থা স্থিতিশীল

ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্ত সাড়ে তিন মাসের শিশু আয়েশা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্ত সাড়ে তিন মাসের শিশু আয়েশাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত দুইটা থেকে আয়েশা ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক প্রবীর কুমার সরকারের পর্যবেক্ষণে আছে। প্রবীর কুমার সরকার আজ বুধবার বেলা দুইটায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইসিইউতে চিকিৎসা শুরুর পর থেকে আয়েশার অবস্থা স্থিতিশীল। এটাই আশার কথা। তবে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নিয়েই আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষায় যে ফল এসেছে, তা ভালো নয়। এমন জটিল রোগীর ক্ষেত্রে মাত্র ১২ ঘণ্টায় কোনো মতামত দেওয়া যাচ্ছে না।’

আয়েশার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আজ সকালে যে ফল এসেছে, তাতে দেখা যায় হিমোগ্লোবিন  ৮ দশমিক ৪,  যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। রক্তের অণুচক্রিকা (প্লাটিলেট) ৫৩ হাজার। আছে নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হানির ঝুঁকিও। আজ সকালে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে আয়েশার। শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট জটিল। ভালো বলা যাচ্ছে না এখনই।’

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আয়েশাকে গত রোববার শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। টাকার অভাবে স্বজনেরা তাকে আইসিইউতে নিতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোয় ‘চোখ খুলছে না আয়েশা, টাকার অভাবে আইসিইউতে নিতে পারবে না পরিবার’ শিরোনাম সংবাদ  প্রকাশের পর অনেকেই এগিয়ে এসেছেন সহযোগিতা করতে।

আয়েশার চিকিৎসার সব খরচ বহনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আয়েশার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথা তাঁকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের পক্ষ থেকেও আয়েশার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

আয়েশার বাবা আনসারুল হক এক ব্যক্তির গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সহায়তার জন্য অনেকেই ফোন করেছেন তাঁকে।

সুমাইয়ার অবস্থাও স্থিতিশীল

গতকাল একই প্রতিবেদনে আয়েশা ও সুমাইয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ১৩ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তারের জন্য ঢাকা শিশু হাসপাতালে আইসিইউ না পেয়ে গতকাল উত্তরা সিটি হাসপাতালে নিয়ে যায় তার পরিবার। আজ বেলা আড়াইটায় কথা হয় সুমাইয়ার বাবা মো. আনোয়ার শেখের সঙ্গে। তিনি জানান, সুমাইয়ার রক্তের অণুচক্রিকা এখন ৩০ হাজার। তবে আগের চেয়ে কিছুটা ভালোর দিকে মনে হয়েছে। সকালে আইসিইউতে সুমাইয়াকে দেখতে গিয়েছিল ওর বাবা। চোখ খুলে বাবাকে সুমাইয়া জিজ্ঞেস করেছে, ‘তুমি ভাত খাইছ?’

ছোট্ট একটি চায়ের দোকান চালান আনোয়ার শেখ। নিজের সন্তানের জন্য আইসিইউ পেতে ছুটেছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে।

ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলামের পক্ষ থেকে সুমাইয়ার চিকিৎসার সব খরচ বহনের কথা জানানো হয়েছে।

আনোয়ার শেখ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা দিতে অনেকের কাছ থেকে তিনি ফোন পেয়েছেন। সবার কাছে কৃতজ্ঞ তিনি।

আরও পড়ুন