৭ দিনের মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা ব্যাটারি রিকশা সংগ্রাম পরিষদের

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি করেছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠন। আজ শনিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

ব্যাটারি রিকশার চলাচল তিন দিনের মধ্যে বন্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি করেছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠন। আজ শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এই বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি শুরু হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা না করলে ৩০ নভেম্বর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দাবি জানানো হয়, রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান এবং ইজিবাইক চলাচলে নীতিমালা চূড়ান্ত করা, এসব যানবাহনের নিবন্ধন, এসব যানবাহনের চালকদের লাইসেন্স, রুট পারমিট প্রদান এবং চালকদের প্রশিক্ষিত করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, ‘এখনো সারা দেশে আন্দোলন শুরু হয়নি। সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশার সঙ্গে ৩ কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। তাই আপনারা সাবধান হয়ে যান।’

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবদান রয়েছে উল্লেখ করে খালেকুজ্জামান বলেন, ৩৬ দিনের আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা আহত-নিহত ব্যক্তিদের আনা নেওয়া করেছেন। এর দায়ে উত্তরাতে আমাদের এক ভাইকে গুলি করে পা ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল। অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪৮১ জন মারা গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে ২০০ থেকে ২৫০ জন ছাত্র। বাকিরা শ্রমজীবী। এর মধ্যে রিকশাশ্রমিকরাও আছেন।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব বুলবুল বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে ব্যাটারি রিকশা বন্ধ করা যাবে না। বিকল্প কর্মসংস্থান না করে নিজ দায়িত্বে করা কর্মসংস্থান বন্ধ করা হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। নীতিমালা এবং নিবন্ধন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাটারি রিকশাচালকদের প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে চলাচলের অনুরোধ জানান খালেকুজ্জামান।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্রদের পাশাপাশি এই শ্রমিক ভাইদের বড় ভূমিকা ছিল। শ্রমিক ভাইয়েরা আহত-নিহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। কীভাবে আজ শ্রমিকের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। পথে নেমেছে হামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনার যদি খাবারের সন্ধান, কাজ দিতে না পারেন। কোনোভাবেই তাঁরা নিজেরা যে ব্যবস্থা করেছে, সেটাকে উচ্ছেদ করার অধিকার নাই।’

গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল তিন দিনের মধ্যে বন্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এই রায়ের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া মিরপুর, মালিবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, নাখালপাড়া, রামপুরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। গতকাল শুক্রবার ঢাকার জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রিকশাচালকদের বিক্ষোভ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।