উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জাদুঘর থাকে। বড় বড় শিল্পকর্ম নিলামের ব্যবস্থা হয়। সেসব দেশে শিল্প একটি বিনিয়োগের জায়গা। জায়গাটি আমাদের দেশে তৈরি করতে হলে গ্যালারিগুলোর পাশাপাশি সব মাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন।
রাজধানীর উত্তরায় গ্যালারি কায়ার ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার শুরু হওয়া চিত্রকর্মের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উঠে এল এসব কথা।
সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন ‘অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বিদেশে শিল্পের বড় বাজার আছে। দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে বটে, কিন্তু শিল্পের বাজার তৈরি হচ্ছে না। মধ্যবিত্তের বিকাশের ক্ষেত্রে বিত্তের সঙ্গে মনন, রুচি, সংস্কৃতির যোগ থাকতে হয়। এখানে আমাদের এখনো ঘাটতি আছে।’
রাজধানীর উত্তরায় গ্যালারি কায়ায় শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ৫০ গুণী শিল্পীর চিত্রকর্ম। নিতুন কুন্ডু, কাইয়ুম চৌধুরী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, মুর্তজা বশীর বা ভারতীয় শিল্পী সনৎ করের মতো প্রয়াত বরেণ্য শিল্পীদের আঁকা ছবি আছে এই প্রদর্শনীতে। স্থান পেয়েছে হাশেম খান, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহমেদের মতো প্রথিতযশা শিল্পীদের ছবি। স্বনামধন্য শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্য থেকে একেবারে তরুণ শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্মও পাবেন দর্শক এখানে। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ৮৪টি ছবি আঁকা হয়েছে ১৯৫৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন ‘এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের শিল্পকে ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে আমি যতটা জেনেছি, তাতে উন্নত দেশগুলোতে এখন শিল্প বিনিয়োগের জায়গা।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, দর্শক ও শিক্ষার্থীরা। ধারাবাহিকভাবে গ্যালারি কায়ার পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে এডিএন গ্রুপ। গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের আঁকা ছবি নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীর জন্য গ্যালারি কায়ার প্রতি শুভেচ্ছা জানান এডিএন গ্রুপের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন গ্যালারি কায়ার পরিচালক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী।
২০০৪ সালের ২৮ মে যাত্রা শুরু হয় গ্যালারি কায়ার। এর মধ্যে ১৩৭টি প্রদর্শনী, দেশ ও দেশের বাইরে ৭টি আর্ট ক্যাম্প, ৩১টি আর্ট ট্রিপ ও ৭টি ওয়ার্কশপ করেছে কায়া। আগামী বছর দুই দশক পূর্ণ হবে এই গ্যালারির। ‘১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রদর্শনী’ শিরোনামের প্রদর্শনী চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে দর্শকদের জন্য।