বুয়েট ছাত্র ফারদিন হত্যা : বন্ধু আয়াতুল্লাহর জামিন আবেদনের আদেশ রোববার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর (পরশ) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আয়াতুল্লাহ্ বুশরার জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী রোববার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহাবুবুর রহমান।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই মামলায় গ্রেপ্তার ফারদিনের বন্ধু আয়াতুল্লাহর জামিনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবী মোখলেছুর রহমান। অন্যদিকে বাদী পক্ষ ও রাষ্ট্র পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
ফারদিনের বাবার আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, বুয়েট ছাত্র ফারদিন হত্যায় আয়াতুল্লাহ জড়িত, সেটি আদালতে বলেছেন। তাঁর নাম মামলার এজাহারে আছে। তদন্ত শেষ হয়নি। এই অবস্থায় জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
পিপি মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আসামি আয়াতুল্লাহ এই মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তবে রাষ্ট্র পক্ষে তিনি বলেছেন, মামলাটি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই অবস্থায় তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করা হোক।
আয়াতুল্লাহর জামিন শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন। জামিন শুনানি শেষ হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আয়াতুল্লাহ তাঁর ছেলের খুনের ঘটনায় জড়িত।
বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে গত ৪ নভেম্বর ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ওই দিনই তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় জিডি করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
এ ঘটনায় ফারদিনের বাবা মামলা করেন। মামলায় ছেলের বন্ধুকে আয়াতুল্লাহ বুশরাকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন তিনি।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে প্রাথমিক ধারণার কথা জানিয়েছিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। এরপর এটিকে হত্যাকাণ্ড ধরে মামলার তদন্ত এগোলেও সম্প্রতি তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফারদিন নূর আত্মহত্যা করেছিলেন। এ ঘটনার ছায়া তদন্ত করা র্যাবের পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়। দাবির পক্ষে যুক্তি হিসেবে রাতের আঁধারে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে একজনের নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার একটি ভিডিও হাজির করেছিল তাঁরা।
তবে তাঁদের এই বক্তব্য মেনে নেয়নি ফারদিনের পরিবার। ফারদিন ‘হত্যাকাণ্ডের’ বিচার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা বুয়েট শিক্ষার্থীরাও ডিবি-র্যাবের বক্তব্য নিয়ে কয়েকটি বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।