বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ ৫ জেলার সব অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের নির্দেশ

গত বছরের ২১ মার্চ মেসার্স এনআর ব্রিকস নামের এ ইটভাটার চিমনি ভেঙে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এরপরও আইন আমান্য করে টিন দিয়ে চিমনি তৈরি করে পোড়ানো হচ্ছিল ইট। একই বছরের ৪ এপ্রিল গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুরের পাইনশাইল গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ পাঁচ জেলার অবৈধ সব ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান। সে অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর, দুই সিটি করপোরেশনসহ চার বিবাদীর পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

আরও পড়ুন

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করীম ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ শুনানিতে ছিলেন।

ঢাকা ও এর আশপাশের চার জেলায় (গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ) থাকা অবৈধ সব ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদ করতে হাইকোর্ট পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মহানগর পুলিশের দাখিল করা প্রতিবেদনে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেননি। বায়ুদূষণ রোধে আদালতের ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে ঢাকা কীভাবে টানা বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকে—শুনানিতে আদালত এমন প্রশ্ন রেখেছেন বলে জানান এই আইনজীবী।

আরও পড়ুন

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বায়ূদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ‘ঢাকায় নিশ্বাস নিলেও বিপদ’ শিরোনামে গত ২৯ জানুয়ারি প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে বায়ুদূষণ রোধে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করে এইচআরপিবি।

আরও পড়ুন

৯ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; রাস্তায় সিটি করপোরেশনের পানি ছিটানো; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ি চলাচলের সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়া সময়সীমার পর গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করা।             

আরও পড়ুন