‘বর্ণমেলায় এসে একুশে ফেব্রুয়ারিকে অনুভব করতে পারছি’
রাজধানীর ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে আয়োজিত বর্ণমেলায় অস্থায়ীভাবে বানানো শহীদ মিনারের পেছনে তারের বেড়ায় ঝুলছিল নানা উপকরণে বানানো নানা রঙের বর্ণ। সেই বর্ণপ্রদর্শনী দেখছিল আরিশা বিশ্বাস, আরিনা বিশ্বাস ও তাহানি আবসি। বর্ণমেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিনা বলে, ‘বর্ণমেলায় এসে আমি একুশে ফেব্রুয়ারিকে অনুভব করতে পারছি।’
মাঠের মাঝখানে হার্ডবোর্ড দিয়ে বানানো বিশাল আকৃতির ‘মা’ শব্দটি বসানো ছিল। আর সামনে রাখা ছিল রঙের বালতি ও ব্রাশ। শিশুরা সেই রং দিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে রাঙাচ্ছিল ‘মা’-কে।
এবারের বর্ণমেলা সেজেছিল বাংলার রূপকথার বেশে। দিনভর আয়োজনে মেলায় শিশু-কিশোরদের জন্য ছিল বেশ কিছু প্রতিযোগিতা। এসবের পাশাপাশি ছিল নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন, যা এ প্রজন্মের সামনে ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
ছিল বর্ণপ্রযুক্তি, বর্ণ উপহার, খাবারে-পোশাকে বর্ণ, কাগজের ইশকুল, বর্ণে নাগরদোলা, সিসিমপুর, বাবুল্যান্ড, গুফি ওয়ার্ল্ড, কিডস টাইম, ঢাকা পাপেট থিয়েটার, কাকতাড়ুয়া পাপেট, জাদু, গানসহ বর্ণ নিয়ে নানা আয়োজন।
২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে প্রথম আলো আয়োজন করে বর্ণমেলার। এ আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি। সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম। আর মেলার প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।
মেলায় আসা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিশা বিশ্বাস বলে, ‘আমরা বাংলা বর্ণগুলো বইয়ে দেখি, এখানে এসে বর্ণমালা ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ হলো। বর্ণমালাগুলো পরিবেশ থেকে বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা নতুনভাবে জানার সুযোগ করে দিয়েছে। যেমন “ব”-তে বাদাম হয়। বাদাম দিয়ে “ব” বানানো হয়েছে।’
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদাতুল ইসলাম আলী বলে, ‘গল্প, গান, নাচ, বায়স্কোপ, আঁকাআঁকি, পুতুলখেলা, মাটির পুতুলসহ অনেক আয়োজন ছিল। এসবের মধ্য দিয়ে আমি বাংলা ভাষা ও বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পেরেছি।’
বারিধারা থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিল হাসান মা-বাবার সঙ্গে বর্ণ দেখছিল। সেখানে লাল রঙের একটি বর্ণ দেখিয়ে তানজিল বলে, ‘বাংলা ভাষার জন্য আমাদের অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। তাই এই ছবিতে এত রক্ত।’
মেলায় আরও ছিল বই বর্ণালিতে প্রথমা প্রকাশন, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা, অন্য রকম বিজ্ঞানবাক্স, ঢাকা কমিকস, মেরিল বেবি বর্ণিল বর্ণ, সুপারমমের বাড়ি, সেপনিল আমার বর্ণ আমার হাতে। বর্ণায়নে ছিল মা-বাবার জন্য টি-শার্টে নকশা করার সুযোগ। বর্ণে মেহেদিতে ছিল বর্ণের নকশায় হাত রাঙানো এবং রং দিয়ে মুখ নকশা করার সুযোগ। বর্ণমেলায় ছিল ছোট্ট সোনামণিদের হাতেখড়ির আয়োজনও।