ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা

সকাল ৯টার দিকে বনানী এলাকার সড়কের চিত্রছবি: গোলাম ওয়াদুদ

পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা ফাঁকা হচ্ছে। ঢাকার রাস্তায় আজ শুক্রবার নেই চিরচেনা ব্যস্ততা, নেই যানজট।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এই তারিখ ধরে গতকাল বৃহস্পতিবারই ছিল ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস। গতকাল বিকেলে অফিস-আদালত ছুটির পর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে ঘরমুখী মানুষদের ভিড় বাড়তে থাকে।

আজ সকালে দেখা যায়, লোকজন ব্যাগ নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। এ জন্য তাঁরা ঢাকার বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটের দিকে যাচ্ছেন। তবে সড়কে যানবাহন খুবই কম।

বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে বনানী এলাকার সড়কের চিত্র
ছবি: সাজিদ হোসেন

আজ সকাল ৮টা থেকে ৯টার দিকে ঢাকার গ্রিনরোড, পান্থপথ, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, মুগদাসহ বিভিন্ন সড়ক অন্য দিনের তুলনায় অনেকটাই ফাঁকা দেখা যায়।

রাস্তা ফাঁকা থাকায় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কারওয়ান বাজার আসতে সময় লাগে মাত্র ১৮ মিনিট। অন্য দিন হলে দ্বিগুণ বা তারও বেশি সময় লেগে যেত।

সকালে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আসতে কোথাও ট্রাফিক সিগন্যালে পড়তে হয়নি। যাত্রীর পাশাপাশি রাস্তায় কম দেখা যায় গণপরিবহন।

সকাল সাড়ে ৯টায় কুড়িল, শেওড়া ও বনানীতে কিছু লোকজনকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। অনেককে দেখা গেল পাঠাও (মোটরসাইকেলে) করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তাঁরা যে বাড়ি ফেরার জন্য যাচ্ছেন, তা তাঁদের হাতে ও পিঠে থাকা ব্যাগ দেখেই অনুমান করা যায়।

সকালে বিজয় সরণী মোড়ের চিত্র
ছবি: গোলাম ওয়াদুদ

একটি পরিবহনের কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, তারা আজ তাদের অর্ধেক গাড়ি রাস্তায় বের করেছে। কিছু গাড়ি রিজার্ভে উত্তরবঙ্গে যাত্রী নিয়ে গেছে।

কথা হয় এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস বাসের চালকের সহকারী রুবেল মিয়ার (৩৬) সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল রাত থেকে তাঁরা যাত্রী কম পাচ্ছেন। আজ সকাল থেকে তেমন যাত্রীই নাই। তাঁদের তেলের খরচ ওঠাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

বাসচালক মো. লিটন (৪৭) বলেন, আশুলিয়া থেকে খালি গাড়ি নিয়ে আসছেন। যাত্রীসংকটে গাড়ি কম বের হয়েছে। অন্য সময় তাঁদের গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যায়। কিন্তু আজ নিচ দিয়ে যাচ্ছে, তবুও যাত্রী নেই।

সকালে ফার্মগেট এলাকার সড়কের চিত্র
ছবি: গোলাম ওয়াদুদ

তবে বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাট এলাকায় বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার চাপ আছে। এসব স্থানে যাত্রীদের ভিড় আছে।

গতকাল রাত পর্যন্ত রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনগুলো সময়মতো ছেড়ে গেছে। ঢাকার বাস টার্মিনালগুলো থেকে বাস ও সদরঘাট টার্মিনাল থেকে লঞ্চ ছাড়ছে।

ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৮টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে গেছে। আর টার্মিনালে লঞ্চ এসেছে ৫৩টি।

যাত্রী ও পরিবহন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার ঈদে ৯ দিনের লম্বা ছুটি পাওয়ায় যাত্রীরা তুলনামূলক স্বস্তিতে ঢাকা ছাড়তে পারছেন।