ইজারা দেওয়া জমির নামজারি ও খাজনা নেওয়ার দাবি

সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘ মেয়াদে ইজারা পাওয়া জমির নামজারির ব্যবস্থা ও খাজনা নেওয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। ঢাকা, ১৯ নভেম্বরছবি: প্রথম আলো

মতিঝিল, পল্টন, সেগুনবাগিচাসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘ মেয়াদে ইজারা পাওয়া জমি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সেখানকার জমির মালিকেরা। তাঁরা বলছেন, সরকারের এক পরিপত্রের কারণে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বৈধ প্রক্রিয়ায় এসব জমি বিক্রি, হস্তান্তর ও নামজারি করতে পারছেন না। সরকারকে খাজনাও দিতে পারছেন না। এসব জমির নামজারির ব্যবস্থা ও খাজনা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান পুরানা পল্টন ও সেগুনবাগিচা খাসমহল ভূমির মালিক কমিটির সভাপতি আবু খালিদ মোহাম্মদ বরকতউল্লাহ।

লিখিত বক্তব্যে আবু খালিদ মোহাম্মদ বরকতউল্লাহ বলেন, ১৯২৪ সালে তৎকালীন ভারত সম্রাট ঢাকার মতিঝিল, পল্টন, সেগুনবাগিচা, রমনা, কাকরাইল, ওয়ারী, গেন্ডারিয়াসহ ঢাকার আরও কয়েকটি এলাকায় বসতি গড়তে অকৃষি পতিত জমি তৎকালীন সরকারি-বেসরকারি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুকূলে ৩০ বছর অন্তর দুই দফা নবায়নযোগ্য দীর্ঘমেয়াদি ইজারা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন ভূমিমালিকেরা প্রথমবার ইজারা নবায়ন করেন।

আবু খালিদ মোহাম্মদ বরকতউল্লাহ বলেন, চূড়ান্ত মেয়াদে ইজারা নবায়নের কাজ চলাকালে ১৯৮৫ সালে তৎকালীন সরকারের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, ‘পূর্বতন খাসমহলের অকৃষি খাস জমি যাহা চিরন্তন নবায়নযোগ্য দীর্ঘ মেয়াদী লিজ ছিল তাহা স্থায়ী বন্দোবস্ত বলিয়া বিবেচনা করা হইবে এবং ভবিষ্যতে কোনো নবায়নের প্রয়োজন হইবে না।’

কিন্তু ২০ বছর পর ২০০৫ সালের জুন মাসে একটি পরিপত্রের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়। এরপর ২০১১ সালে জারি করা আলাদা দুটি পরিপত্রের মাধ্যমে খাসমহল ভূমির ইজারা নবায়নসংক্রান্ত ফি ধার্য করা হয়। ওই পরিপত্রের মাধ্যমে মৌজা মূল্যের ওপর ২৫ শতাংশ বা ৩০ শতাংশ ফি নির্ধারণ করা হয়। ইজারা নবায়নের জন্য নির্ধারণ করা ফি অযৌক্তিক ও অবাস্তব।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৮৫ সালের পরিপত্র বাতিল করায় সংশ্লিষ্ট জমিতে ডেভেলপার কোনো ভবন নির্মাণ করলে ফ্ল্যাট বা অফিস ক্রেতাকে নিবন্ধন করে দেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে ক্রেতারা টাকা পরিশোধ করছেন না। অপরদিকে ব্যাংক বা অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গৃহায়ণ ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না। এতে জমির মালিক ভাড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অপরদিকে ফ্ল্যাট মালিকেরা বিনিয়োগ করেও পজিশন বুঝে পাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ ফ্ল্যাট বুঝে পেলেও নিবন্ধন না হওয়ায় মালিকানা বুঝে পাচ্ছেন না।