লংমার্চ ঘোষণা করে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর শাহবাগ মোড় ছাড়লেন অবরোধকারীরা

আহতদের একাংশ দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারীরাছবি: দীপু মালাকার

লংমার্চ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ মোড় ছেড়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনদের একটি অংশ। শহীদ পরিবারের স্বজনেরা তিন দফা দাবিতে আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার অবরোধের ফলে আশপাশের এলাকার সড়কেও তীব্র যানজট তৈরি হয়।

গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবার ব্যানারে আন্দোলনকারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো বৈষম্য নিরসনে আহতদের তিনটি ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে দুটি ক্যাটাগরি করা, প্রান্তিক এলাকায় আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে টোল ফ্রি হটলাইন সেবা চালু করা এবং আহতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও তাঁদের সুরক্ষায় আইন করা।

এসব দাবি আদায়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় শাহবাগ মোড় থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের একজন মো. আরমান অবরোধ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ করলেও সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ালে যান চলাচল শুরু হয়
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক অবরোধের ফলে আশপাশের এলাকার সড়কেও তীব্র যানজট তৈরি হয়। সন্ধ্যার পর বেশ কিছু সড়কে যান চলাচল কার্যত থেমে যায়। গাড়ি থেকে নেমে অনেকে গন্তব্যের উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। গন্তব্য পৌঁছাতে অনেকে মেট্রোরেল ব্যবহার করেন। এতে সন্ধ্যার পর থেকে শাহবাগ, কারওয়ান বাজারসহ বেশির ভাগ মেট্রোস্টেশনগুলোয় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভিড় দেখা যায়।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকার ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’—এই তিনটি ক্যাটাগরি করে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে। ‘সি’ ক‍্যাটাগরিতে ‘এ’ এবং ‘বি’–এর মতো সুবিধা রাখা হয়নি। এটি খুবই বৈষম্যমূলক। আন্দোলনকারীদের দাবি, সব আহতকে ‘এ’ অথবা ‘বি’ ক্যাটাগরিতে চিকিৎসা দিতে হবে। ক‍্যাটাগরি হবে দুটি। আহত এবং গুরুতর আহত।

আন্দোলনকারীদের অনেকে আহত প্রত‍্যেককে সরকারি ভাতার আওতায় আনার দাবি জানান।

সকাল ১০টার পর শাহবাগে অবস্থান নেন ৩০-৪০ আন্দোলনকারী। এরপর তাঁরা শাহবাগ মোড় থেকে বাংলামোটরমুখী লেনটি অবরোধ করেন। এতে ওই পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাঁরা সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য বেলা দুইটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শাহবাগ থানার ওসি খালেদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের এক পাশের সড়কে অবস্থান করছিলেন। মোড়ের অন্য লেনগুলো দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। বিকেলের পর তাদের কয়েকজন সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন। তখন চারপাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছিল। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাঁরা সড়ক ছেড়ে যান।