বেলা ২টার মধ্যেই ৬টি ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহ শেষ: মেয়র আতিক
ঘোষণা দিয়েছিলেন আট ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ করবেন। কিন্তু সেই কাজ যখন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে গেলেন, তার আগেই ছয়টি ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানালেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মণিপুর এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের সময় মেয়র এ তথ্য জানান। এ ছাড়া রাজধানীর হরিরামপুর এলাকায় ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের কাজও ৭০ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়, যে ছয়টি ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের কাজ শেষ, সেগুলো হলো ৭, ২৪, ২৮, ৩২, ৩৯ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড।
ওই ৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটির, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম বিকেল ৪টা ২৪ মিনিটে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বর্জ্য অপসারণের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। এর মধ্যেও এখনো পশু কোরবানি হচ্ছে, সেগুলোর কাজ চলমান। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে কিছুটা অসুবিধা ছিল। তবে সুবিধাও হয়েছে, কোরবানির পশুর রক্ত বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে চলে গেছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেই মণিপুর এলাকায় এমন কোনো বছর ছিল না, যখন এখানে কোরবানির তিন-চার দিন, কখনো পাঁচ দিন পরও ময়লা পড়ে থাকত। তাই এই এলাকা পরিষ্কার করা আমাদের জন্য এক প্রকার চ্যালেঞ্জ।’
বৃষ্টির মধ্যে নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজটি চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করে মেয়র বলেন, দুই দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। আজকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরপরও সিটি করপোরেশনের সব টিম মাঠে আছে। বৃষ্টির মধ্যেও চ্যালেঞ্জ নিয়ে পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। নগরবাসীর সহায়তায় সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হচ্ছে।
মেয়র জানান, কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাঠে রয়েছেন। সাড়ে ৬০০ যানবাহন বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহনের কাজে নিয়োজিত আছে। নগর ভবনের দোতলায় জরুরি সাড়াদান কেন্দ্রে (ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টার) সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ ও তদারক করা হচ্ছে। যেসব এলাকা থেকে ফোন আসছে, সেখানেই যান–যন্ত্রসহ টিম পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বৃষ্টির মধ্যে এখনো অনেকে কোরবানি দেননি জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমি নগরবাসীকে অনুরোধ করব, আজ এবং আগামীকালের মধ্যে কোরবানি দিতে। তাহলে যে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ করল, তারা আগামী পরশু একটু বিশ্রামের সুযোগ পাবে।’
নগরবাসীকে সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘কোরবানি দিয়ে যাঁরা গ্রামের বাড়িতে যাবেন, যাওয়ার আগে অবশ্যই ছাদে, গ্যারেজে গিয়ে দেখবেন, কোনো ধরনের পাত্রে পানি জমে আছে কি না। পানি জমে থাকলে বাড়ি থেকে ফিরে দেখবেন, সেখানে এডিস মশার জন্ম হয়ে আছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ করছি।’
মেয়র বলেন, ‘বেলা দুইটা থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করছি। নগরবাসীর সহযোগিতায় রাত ১০টার মধ্যেই নগরকে পরিষ্কার করা হবে। পরের দিনও একই সময়ের মধ্যেই বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ করা হবে।’ শেষে মেয়র এই শহরের প্রতি ভালোবাসাস্বরূপ কোরবানির বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে রাখার অনুরোধ করেন।