জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি
জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন, সাইকেল শোভাযাত্রা ও মূকাভিনয়ের আয়োজন করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ব্রতীসহ নয়টি সামাজিক সংগঠন। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন শুরুর আগের দিন গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ইকুইটি বিডি, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), ব্রতী, গ্লোবাল ল’থিংকার্স সোসাইটি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলো জলবায়ু–সংকটের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। শিল্পোন্নত দেশগুলোর অনিয়ন্ত্রিত কার্বন নিঃসরণে বর্তমানে সারা বিশ্ব একটি সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জি-২০ সম্মেলনে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই।’
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আমাদের মতো গরিব দেশগুলো চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। জি-২০ সম্মেলনে প্রতিবার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নে নির্জীব ভূমিকা পালন করে থাকে।’
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম বলেন, জি-২০ সম্মেলনে পৃথিবীকে এক পরিবার বললেও সংগঠনটি বিশ্বের ধনী দেশগুলোর স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে পর্যায়ক্রমে বের হয়ে আসার কথা থাকলেও সদস্যদেশগুলোর শিল্পকারখানার কারণে আরও বেশি দূষণের শিকার হচ্ছে গরিব দেশগুলো। অবিলম্বেই এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলে দুর্যোগ বাড়ছে। লবণাক্ততার আগ্রাসনে ফসলের উৎপাদন কমছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ও সাগরসৈকত ধ্বংস হচ্ছে। ফলে উপকূলের মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
সিপিআরডির গবেষণা কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর ঋণনীতিতে মুনাফা অর্জনকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেখান থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তুসংস্থান ও জলবায়ুর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জলবায়ু শরণার্থী, নদীদূষণ ও বৃক্ষনিধনবিষয়ক মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের শিল্পীরা। এ সময় বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের শতাধিক সাইক্লিস্ট একটি র্যালিতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক, গ্লোবাল ল’থিংকার্স সোসাইটির সভাপতি রাওমান স্মিতা, কম্পিটিশন কমিশনের উপদেষ্টা এম এস সিদ্দিকি, সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম, ইয়ুথ নেটের সমন্বয়ক এস জেড অপুসহ আয়োজনকারী সংগঠনগুলো ছাড়াও পরিবেশবাদী সংগঠন ও ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।