গণ-অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গণ-অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করেন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত ছিল।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল সরোয়ার আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের সড়কে রাতভর অবস্থান নিয়ে গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করেন। ভোরের দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে কলেজের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিতুমীর কলেজের সামনে দেখা যায়, অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটকের সামনে বসে অনশন করছেন। পাশেই বনানী থানার টহল পুলিশের একটি গাড়ি। সড়কের উল্টোপাশে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে।
অনশনে অংশ নেওয়া তিতুমীর কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আর এফ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান বলছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তাই যৌক্তিক দাবি আদায়ে তাঁরা জীবন দিতেও প্রস্তুত আছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজ সড়কে আদায় করবেন বলে জানান আর এফ রায়হান।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে খোলা ‘তিতুমীর ঐক্য’ নামের ফেসবুক পেজে আজ সকালে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, কলেজের ফটকের সামনে বেশি কিছু শিক্ষার্থী বসে আছেন। আর ফটকে আমরণ অনশন কর্মসূচির ব্যানার লাগানো রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, ততক্ষণ তাঁরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে গত বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে অনশনে বসেন কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থী। গতকাল সকালে আরও কিছু শিক্ষার্থী অনশনে যুক্ত হন।
গতকাল দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়া কিছু অনশনকারী শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠাতে দেখা যায়। গতকাল বেলা আড়াইটার পর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা গণ-অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ সাত দফা দাবিতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে যান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কলেজ-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য কিছু প্রক্রিয়া আছে, এর মধ্যে প্রথমত আইন করা। আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে কথা বলবেন। যত দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কাজ শেষ করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। অনশনকারী শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
তবে শিক্ষার্থীরা এ সময় মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হননি। কর্মকর্তার উদ্দেশে তাঁরা বলেন, ‘হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেন, নয়তো আপনিও অনশনে অংশগ্রহণ করুন।’