মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ‘রসবোধ থেকে বলা’: ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক

ওয়ালী আসিফ

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ফিরিয়ে নিতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানানোর তিন দিন পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ বলছেন, বাঙালির চিরাচরিত রসবোধের জায়গা থেকে তিনি এ কথা বলেছিলেন।

গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। ‘হরতাল, অবরোধ, সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে তারুণ্যের অগ্রযাত্রা রোধ, শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত করা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টার প্রতিবাদে’ আয়োজিত ওই সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বিএনপি-জামায়াতের ‘পৃষ্ঠপোষক’ বলে আখ্যা দিয়ে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকদের বক্তব্যের জবাব না দিতে দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বুধবারের ওই সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি বাংলাদেশকে পেছন দিকে ফিরিয়ে নিতে চায়। তারা বলে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। পিটার হাসকে তাদের (বিএনপি-জামায়াত) পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘আমেরিকার উদ্দেশে বলব, টেক ব্যাক ইওর হাস। হাসকে আপনারা ফিরিয়ে নিয়ে যান। এই হাঁস, পাতিহাঁস—বাংলাদেশে আমরা চাই না। আমরা হাঁস অনেক জবাই করে খেয়েছি। রাজহাঁস পর্যন্ত এই বাংলার মানুষ ধরে ধরে খায়।’ এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ওয়ালী আসিফের এ বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ বক্তব্যের বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঙালির সহজাত রসবোধ থেকেই কথাগুলো বলেছিলাম। কোনো দেশ বা কোনো দেশের কূটনীতিকের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কে ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করে না।’

গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত ছাত্রলীগের সমাবেশ
ছবি: সংগৃহীত

ছাত্রলীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যে নীতি ছিল—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়—আমরা এতেই বিশ্বাস করি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি এই মানসিকতাই ধারণ করি। আমার বুধবারের বক্তব্যটি বাঙালির চিরাচরিত রসবোধের জায়গা থেকে দেওয়া। এটিকে কঠোরভাবে, ব্যক্তিগতভাবে কিংবা ঋণাত্মকভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই মানসিকতা থেকেই আমরা সবার সঙ্গে আচরণ বা সম্পর্ক রাখতে চাই।’