শিক্ষার্থীদের রাজপথে না নামার অনুরোধ ঢাকা মহানগর পুলিশের
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল–সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের এক মাসের স্থিতাবস্থার আদেশের পর এখন কেউ রাস্তা বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করলে পুলিশ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খন্দকার মহিদ উদ্দিন।
খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই রায়ের ব্যাপারে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ থেকে শিক্ষার্থীদের আর জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার কোনো অবকাশ আছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ মনে করে না।
মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের প্রতি পুলিশের অবশ্যই ভালোবাসা, সহমর্মিতা আছে। কিন্তু সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, দেশের প্রচলিত আইন ও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে আমরা বাধ্য। সেই জায়গা থেকে ডিএমপির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি আমি বিনীত অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন মানুষকে দুর্ভোগ দিয়ে কর্মসূচি না দেন।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ১০ দিন ধরে শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের গাড়ি, চলাফেরা ব্যাহত হয়েছে। মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে সেই চেষ্টা করা হয়েছে।
মহিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশ সবার অধিকারের বিষয়ে যেমন শ্রদ্ধাশীল, তেমনি মহানগরবাসীর নিরাপত্তা ও গমনাগমন নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।
মহিদ উদ্দিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৬ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন। পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের আবেদন ও সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই রয়েছে। তাই পরবর্তী কর্মসূচির কোনো যৌক্তিকতা নেই। শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতা ও ভালোবাসা অব্যাহত থাকবে।’
এইচএসসি পরীক্ষা চলছে উল্লেখ করে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ৭ জুলাই রথযাত্রা ছিল। ডিএমপি প্রচণ্ড চাপ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছে। সামনে আশুরা ও উল্টো রথযাত্রা রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবারও ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন; পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে—এমন প্রশ্নের জবাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের পক্ষে রয়েছে। কাজেই আন্দোলনের যৌক্তিকতা না থাকলে রাজপথে নামা উচিত নয়। আন্দোলন না করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ রইল।
এরপরও নির্দেশনা না মেনে আন্দোলন করলে পুলিশের পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের আইন ও দেশের প্রচলিত আইনে এটা অপরাধ। গত ১০ দিনে পুলিশের কোনো সদস্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেননি, যাতে করে পুলিশের পেশাদারত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা সেই সম্মানটুকু রাখবেন।’