মিরপুরে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। একপর্যায়ে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ পোশাকশ্রমিকেরা পুলিশের একটি ও সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন।

গুলিবিদ্ধ দুই পোশাকশ্রমিক হলেন আল আমিন (১৮) ও ঝুমা আক্তার (১৫)।  তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

গাড়িতে লাগা আগুন নেভাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস
ছবি: সংগৃহীত

সংঘর্ষ মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিরপুর ১৪ নম্বর সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পোশাকশ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

পুলিশ একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি চালায়। এতে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আল আমিনের দুই কাঁধে ও ঝুমার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।


কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে। একপর্যায়ে পোশাকশ্রমিকেরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা লিমা খানম প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়িতে লাগা আগুন নিভিয়েছে।

কচুক্ষেত এলাকায় মৌসুমি অ্যান্ড ভুঁইয়া নামে একটি ভবনের নিরাপত্তাকর্মী জানান, তিন দিন আগে ওই ভবনের একটি পোশাক কারখানায় এক নারী পোশাকশ্রমিককে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদ জানাতে গেলে একজন পুরুষ শ্রমিককেও মারধর করা হয়। আজ সকালে শ্রমিকেরা ওই কারখানায় গেলে কারখানা বন্ধ দেখেন। এ ঘটনার বিচার দাবিতে ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন।