রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে দেয়াল তৈরির কাজ শেষ করেছে পুলিশ।
মাঠটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী, পরিবেশবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আন্দোলনের মধ্যেই পুলিশ দেয়াল তৈরির কাজ সম্পন্ন করল। গতকাল বুধবার রাতে এই দেয়াল তৈরির কাজ শেষ হয়।
এলাকাবাসী বলছেন, গতকাল প্রতিবাদ-সমাবেশ চলাকালে দেয়াল তৈরির কাজ বন্ধ ছিল। সবাই চলে যাওয়ার পর আবার কাজ শুরু হয়। রাতের মধ্যেই দেয়াল তৈরির কাজ শেষ করে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তেঁতুলতলা মাঠের উত্তর পাশের পুরো এলাকাজুড়ে দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। শুধু এক পাশে সামান্য জায়গা খালি রাখা হয়েছে। সেখান দিয়ে মাঠে ঢোকা যায়।
মাঠের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক পুলিশ সদস্য সেখানে বসে আছেন। মাঠের ভেতর ও দেয়াল ঘেঁষে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণসামগ্রী।
গতকাল মাঠটির সীমানা ঘেঁষে ১৪টি দেশি প্রজাতির গাছ রোপণ করেন আন্দোলনকারীরা। গাছগুলো সেভাবেই রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাঠ রক্ষায় আন্দোলন চলছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, তারপরও পুলিশ নির্মাণকাজ বন্ধ করেনি। পুলিশ দখলদারি মনোভাব দেখিয়ে মাঠে দেয়াল তুলে ফেলেছে।’
মাঠে দেয়াল তোলা প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাঠ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগেই পুলিশের এভাবে দেয়াল তৈরি করাটা ঠিক হয়নি। তবে আমরা সবাই মিলে মাঠটি রক্ষা করতে পারব বলে আমি এখনো আশাবাদী।’
মাঠটি রক্ষার দাবিতে গতকাল সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দেখা করেন আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা। তাঁরা আধা ঘণ্টার মতো মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কথা স্পষ্ট, আমাদের জায়গার প্রয়োজন। কলাবাগানে একটা থানাভবনের প্রয়োজন। এর চেয়ে যদি ভালো কোনো জায়গা মেয়র বা অন্য কেউ ব্যবস্থা করেন, তখন আমরা সেটা বিবেচনা করব।’
তেঁতুলতলা মাঠটি স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকের একটি গলিতে। এটি মূলত একটি খালি জায়গা, যা পুলিশ জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে কলাবাগান থানার ভবন নির্মাণ করছে।
মাঠটি রক্ষার দাবিতে অনেক দিন ধরে আন্দোলন চলছিল। এর মধ্যে গত রোববার মাঠটি রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তাঁর কিশোর ছেলেকে কলাবাগান থানার পুলিশ ধরে নিয়ে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখে। পরে প্রতিবাদের মুখে মধ্যরাতে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।