এবার বাড়ছে পানির দাম
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধগতির মধ্যেই এবার বাড়ছে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম। আজ বৃহস্পতিবার সংস্থাটির বোর্ড সভায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এ নিয়ে গত ১৪ বছরে অন্তত ১৫ বার বাড়ানো হলো পানির দাম।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিলে ও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মিলে মোট দুই দফা পানির দাম বাড়ানো হয়। এ দুই দফায় আবাসিকে প্রতি ১ হাজার লিটারে পানির দাম বেড়েছিল ৩ টাকা ৬১ পয়সা (৩১ শতাংশ)। বাণিজ্যিকে বেড়েছিল ৪ টাকা ৯৬ পয়সা (১৩ শতাংশ)।
বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১ হাজার লিটার পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। আর বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে ১ হাজার লিটার পানির দাম বর্তমানে ৪২ টাকা। সেপ্টেম্বর থেকে এই দামের সঙ্গে ৫ শতাংশ অতিরিক্ত যুক্ত হবে।
পানির মূল্য বৃদ্ধি সম্পর্ক ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব দীপ আজাদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনায় রেখে পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন ও পরিচালন ব্যয় বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। গতাকালের বোর্ড সভায় এটি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব নেন তাকসিম এ খান। ওই সময় আবাসিক পর্যায়ে ১ হাজার লিটার পানির দাম ছিল ৬ টাকা ৪ পয়সা ও বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে ১ হাজার লিটার পানির দাম ছিল ২০ টাকা ১১ পয়সা। এরপর ২০১৬ সাল ছাড়া প্রতিবছরই একবার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। ২০১৬ সালে পানির দাম দুই দফা বাড়ানো হয়েছিল।
সবশেষ পানির দাম বাড়ানো নিয়ে জানতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানকে ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
তবে ওয়াসার পানির মান নিয়ে ক্ষুব্ধ জুরাইনের বাসিন্দা ও সমাজকর্মী মিজানুর রহমান পানির মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষের কষ্টের টাকা ডাকাতি করে নিজেদের ভোগবিলাসিতায় ব্যয় করতে যাদের সামান্যতম লজ্জা হয় না, সে রকম প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মন্তব্য করতেও নাগরিক হিসেবে লজ্জা বোধ করি। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে উল্টা পানির দাম মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে হবে। পানিপ্রাপ্তির বৈষম্য দূর করতে হবে এবং পানির অপচয় রোধ করতে হবে।’